সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন আমতলী উপজেলাবাসী। এ উপজেলার ৩ লক্ষ মানুষের জন্য হাসপাতালে চিকিৎসক আছেন মাত্র ৪ জন। এতে চরম ভোগান্তিতে সাধারণ রোগীরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় ৩০ কিলোমিটার দূরে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ৬৫ কিলোমিটার দূরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। বিশেষ করে বৃদ্ধ, গর্ভবতী মহিলা ও শিশু রোগীদের নিয়ে অভিভাবকরা বেশী সমস্যায় পড়ছেন।
আমতলী হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ২১টি পদের বিপরীতে চিকিৎসক আছেন মাত্র ৪ জন। এরা হলেন উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক ডাঃ শংকর প্রসাদ অধিকারী, মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ শাহাদাৎ হোসেন, ডাঃ শাকিলা পারভীন ও ডাঃ ইমদাদুল হক চৌধুরী। বাকী ১৭টি পদের মধ্যে জুনিয়র কনসালটেন্ট- শিশু, কার্ডিয়াক, অর্থোপেটিক্স, চক্ষু, ইএনটি, স্কীন, এ্যানেসথিসিয়া, প্যাথলজিষ্ট, গাইনী, মেডিসিন, মেডিকেল অফিসার, সহকারী সার্জন এমও, ইএমও, প্যাথলজিষ্ট, আইএমও, এ্যানেসথিসিয়া, ইউনানী (নবসৃষ্ট) ও ডেন্টাল সার্জন পদগুলো দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে।
এরমধ্যে ডেন্টাল সার্জন ডাঃ শেখ রাকিবুল আলম প্রেষনে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে রয়েছেন প্রায় ৯ মাস। দীর্ঘদিন পদগুলো শূন্য থাকায় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত এ উপজেলাবাসী।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথম শ্রেণীর মঞ্জুরকৃত ১৫ জন চিকিৎসকের মধ্যে আছে মাত্র ৪ জন। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে বর্তমানে ৪ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে ৩ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা। এর মধ্যে ডাঃ শাহাদৎ হোসেন ৬ সেপ্টেম্বর সড়ক দূর্ঘটনায় পা ভেঙ্গে এখন বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখন ৩ জন চিকিৎসক হাসপাতালে থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শংকর প্রসাদ অধিকারী হাসপাতালে কোন রোগী দেখেন না।
তিনি অফিসিয়াল কাজকর্ম নিয়েই ব্যস্থ থাকেন। এখন মূলতঃ হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দেয় ২ জন। ডাঃ শাকিলা পারভীন ও ডাঃ ইমদাদুল হক চৌধুরী। এদের মধ্যে কেহ একজন কোন কারনে হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকলে রোগীদের সেবা দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি।
গত আগস্ট মাসের হাসপাতালে প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখাগেছে, ৭২৩০ জন রোগী হাসপাতাল থেকে সেবা নিয়েছেন। এরমধ্যে বহিঃ বিভাগ থেকে ৪৩৬৩ জন, আন্তঃ বিভাগ থেকে ১৯২১ জন, জরুরী বিভাগ থেকে ৯৪৬ জন।
অপরদিকে কুকুয়া ইউনিয়নে ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ২টি চিকিৎসকের পদ থাকলেও একটি পদেও চিকিৎসক নেই। ৩টি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। এগুলো হলো, গুলিশাখালী, গাজীপুর ও তালতলী। এ সকল স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেই কোন এমবিবিএস ডাক্তার। প্রতিটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মঞ্জুরীকৃত ৪টি পদ থাকলেও ১ জন মেডিকেল টেকনিশিয়ান (ফার্মাসিস্ট) দিয়ে কোন মতে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য প্রশাসক ডাঃ শংকর প্রশাদ অধিকারী বলেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় আমরা রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে এ হাসপাতালটি। চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
Leave a Reply