শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৮ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ আগামী ডিসেম্বরে পৌরসভার ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ওই সময়ে ভোট করার প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছে। প্রায় আড়াইশ’র মতো পৌরসভায় ভোট হতে পারে। এই লক্ষ্যে ইসি সচিবালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। রবিবার (২৩ আগস্ট) অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ওই সভায় পৌরসভা নির্বাচনের বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত না হলেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং পৌরসভাগুলোর নির্বাচনের সময় হওয়ায় নভেম্বর-ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে গত ১০ আগস্টের কমিশন সভায়ও একই ধরনের সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে পৌরসভাগুলোর বর্তমান পরিষদের মেয়াদ, নির্বাচন আয়োজনে কোনও জটিলতা আছে কিনা এসব সার্বিক তথ্য চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি সচিবালয়। দুয়েকদিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে বলে ইসির সংশ্লিষ্ট শাখা সূত্রে জানা গেছে। পাশাপাশি নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কমিশন মাঠ প্রশাসনের মাধ্যমে পৌরসভাগুলোর মেয়াদসহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে তিনশ’ পৌরসভা রয়েছে। এদের মধ্যে ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর একযোগে ২৩৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া অন্যান্য পৌরসভাগুলোর ভোট মেয়াদ অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর যে পৌরসভাগুলোর ভোট হয়েছিল, তার বেশিরভাগের মেয়র ও কাউন্সিলররা পরের বছর (২০১৬ সাল) জানুয়ারি/ফেব্রুয়ারি মাসে শপথ নেন। আর ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই হিসেবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে এসব পৌরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
পৌরসভা আইন অনুযায়ী, পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই যেসব পৌরসভার মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে, সেগুলোতে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট করতে হবে। জানা গেছে, কমিশন সভায় নভেম্বর-ডিসেম্বরে ভোটগ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ডিসেম্বরেই ভোট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে ইসি সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় জেলা পরিষদ বাদে সবগুলোতেই দলীয় ভিত্তিতে ভোট হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের মতো সব পৌরসভার ভোট একদিনে অনুষ্ঠিত হবে। পৌরসভাগুলো সদর এলাকা হওয়ায় ইভিএমের ব্যবহার বাড়ানো হবে। কমিশন সভায় সেই প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতি বাড়লে ইভিএমের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে করোনা সংকট পরিস্থিতিতে স্কুল খোলা এবং বার্ষিক পরীক্ষার তারিখ বিবেচনা করে পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
ইসি সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর ২৩৪টি পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করে ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ করা হয়। এবারও ওই তালিকা ধরে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মাঠপর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে ইসি সচিবালয়। ইতোমধ্যে পৌরসভার বর্তমান পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ, প্রথম সভার তারিখ ও জনপ্রতিনিধিদের শপথগ্রহণের তারিখ সংগ্রহ করে কমিশনে পাঠাচ্ছেন বিভিন্ন জেলার নির্বাচন কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলা থেকে ইসি সচিবালয় এই তথ্য সংগ্রহ করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পৌরসভাগুলো নির্বাচন উপযোগী হলেই আমরা ভোট করবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশে বড় ধরনের দুর্যোগ না হলে ওই সময়ই ভোট হবে। সচিবালয়কে সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।’ ডিসেম্বরেই ভোট হাওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানান এই কমিশনার।
যে ২৩৪টি পৌরসভায় ভোটের চিন্তা ইসির:
নির্বাচন কমিশন দেশের ২৩৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণের চিন্তা করছে। তবে এই সংখ্যা কম বা বেশিও হতে পারে। যেসব পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলো হলো, টাঙ্গাইল সদর, ধনবাড়ী, মধুপুর, মির্জাপুর, ভুঞাপুর, সখিপুর, গোপালপুর, কালীহাতি, জামালপুর সদর, সরিষাবাড়ী, মেলান্দহ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, শেরপুর সদর, নকলা, নালিতাবাড়ী, শ্রীবরদী, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, ত্রিশাল, ভালুকা, গফরগাঁও, নান্দাইল, ফুলপুর, ফুলবাড়িয়া, নেত্রকোনা সদর, মদন, মোহনগঞ্জ, দুর্গাপুর, কেন্দুয়া, কিশোরগঞ্জ সদর, কুলিয়ারচর, হোসেনপুর, কটিয়াদী, বাজিতপুর, ভৈরব, করিমগঞ্জ, মানিকগঞ্জ সদর, সিংগাইর, মুন্সীগঞ্জ সদর, মিরকাদিম, ঢাকার ধামরাই, সাভার, নরসিংদী সদর, মাধবদী, মনোহরদী, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ, তারাবো, রাজবাড়ী সদর, পাংশা, গোয়ালন্দ, ফরিদপুরের বোয়ালমারী, নগরকান্দা, গোপালগঞ্জ সদর, টুঙ্গীপাড়া, মাদারীপুর সদর, কালকিনি, শিবচর, শরীয়তপুর সদর, নড়িয়া, ডামুড্যা, জাজিরা, ভেদরগঞ্জ পৌরসভা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, কুমিল্লার চান্দিনা, লাকসাম, দাউদকান্দি, বরুড়া, চৌদ্দগ্রাম, হোমনা, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ছেংগারচর, ফরিদগঞ্জ, কচুয়া, মতলব, ফেনী সদর, দাগনভুইঞা, পরশুরাম, নোয়াখালীর বসুরহাট, চৌমুহনী, হাতিয়া, চাটখিল, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ, রামগতি, রায়পুর, চট্টগ্রামের সন্দীপ, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, মীরসরাই, বারাইয়ারহাট, পটিয়া, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, সীতাকুণ্ডু, খাগড়াছড়ি সদর, মাটিরাঙা, রাঙামাটি সদর, বান্দরবান সদর ও লামা পৌরসভা।
মেহেরপুরের গাংনী, কুষ্টিয়া সদর, মিরপুর, ভেড়ামারা, কুমারখালী, খোকসা, খুলনার পাইকগাছা, দাকোপের চালনা, চুয়াডাংগা সদর, দর্শনা, জীবননগর, আলমডাঙ্গা, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, হরিণাকুণ্ডু, শৈলকূপা, যশোর সদর, নওয়াপাড়া, মনিরামপুর, বাঘারপাড়া, চৌগাছা, কেশবপুর, নড়াইল সদর, কালিয়া, বাগেরহাট সদর, মোড়েলগঞ্জ, মাগুরা সদর, সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া পৌরসভা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, রহনপুর, শিবগঞ্জ, নাচোল, জয়পুরহাট সদর, আক্কেলপুর, কালাই, নওগাঁ সদর, নজিপুর, নাটোর সদর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, নলডাঙ্গা, গোপালপুর, গুরুদাসপুর, পাবনা সদর, ভাঙ্গুড়া, ঈশ্বরদী, চাটমোহর, সাঁথিয়া, সুজানগর, ফরিদপুর, বগুড়া সদর, শেরপুর, সারিয়াকন্দি, গাবতলী, সান্তাহার, কাহালু, ধুনট, নন্দীগ্রাম, শিবগঞ্জ, রাজশাহী জেলার কাঁকনহাট, আড়ানী, মুন্ডুমালা, কেশরহাট, গোদাগাড়ী, তাহেরপুর, ভবানীগঞ্জ, তানোর, কাটাখালী, চারঘাট, দুর্গাপুর, পুঠিয়া, নওহাটা, সিরাজগঞ্জ সদর, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, বেলকুচি ও কাজিপুর পৌরসভা।
ঝালকাঠির নলছিটি, পিরোজপুর সদর, স্বরূপকাঠি, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, কুয়াকাটা, বরগুনা সদর, বেতাগী, পাথরঘাটা, বরিশালের মুলাদী, গৌরনদী, মেহেন্দীগঞ্জ, বানারীপাড়া, বাকেরগঞ্জ, উজিরপুর, ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন, দৌলতখান।
সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, জগন্নাথপুর, দিরাই, সিলেটের জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, গোলাপগঞ্জ, মৌলভীবাজার সদর, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, বড়লেখা, হবিগঞ্জ সদর, নবীগঞ্জ, চুনারুঘাট, মাধবপুর ও শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা।
কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, উলিপুর, গাইবান্ধা সদর, গোবিন্দগঞ্জ, সুন্দরগঞ্জ, পঞ্চগড় সদর, ঠাকুরগাঁও সদর, পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল, দিনাজপুর সদর, ফুলবাড়ী, বীরগঞ্জ, বিরামপুর, হাকিমপুর, নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর, জলঢাকা, পঞ্চগড় সদর, রংপুরের বদরগঞ্জ, লালমনিরহাট সদর ও পাটগ্রাম পৌরসভা।
Leave a Reply