সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪১ অপরাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি॥ ভোলায় যৌতুকের জন্য তাসলিমা বেগম (৩০) নামের এক প্রবাসী গৃহবধূকে জ্বলন্ত সিগারেট দিয়ে হাত-পা ও পুরো শরীর ঝলসে দিয়েছে মো. কামাল হোসেন নামের এক স্বামী। কামাল হোসেন ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু তাহেরের ছেলে। এ ঘটনায় স্ত্রী তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে ভোলা সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
আহত গৃহবধূ তাসলিমা অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ১৬ বছর আগে কামালের সাথে তার প্রেমের সম্পর্কে গড়ে উঠে। পরে তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। তাই কামালের বাবা মা তাদের বিয়ে আজ পর্যন্ত মেনে নেননি। এজন্য সে তার বাবার বাড়ি ভোলার ইলিশা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বসবাস করতো।কামালও সেখানে নিয়মিত যাতায়াত করতো। বিয়ের কয়েক বছর পর তাদের একমাত্র সন্তান রাব্বি (১৩) জন্ম গ্রহণ করেন।
এরপর থেকে কামাল আমাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য বিভিন্ন সময় চাপ দিয়ে আসছিল। আমি রাজি না হলে সে আমাকে বিভিন্ন সময় মারধর করতো।পরে আমি বাধ্য হয়ে তিন বছর আগে জর্ডানে যাই। সেখানে দুই বছর দুই মাস থাকার পর দেশে ফিরে আসি। এতে কামাল আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময় মারধর করতো। দ্রুত যাতে আবার বিদেশে চলে যাই সে জন্য নির্যাতন চালাতে থাকতো।
পরে গত ৪-৫ মাস আগে কামাল আমার কাছ থেকে যৌতুক হিসেবে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। তখন আমি তাকে বলি শ্বশুর বাড়ি এখনও যেতে পারেনি আর তুমি যৌতুক চাও? এ কথা বলার পর গত ৩ মাস আগে আমাকে জোর করে তাদের বাড়ি নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে প্রতিদিন যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালাতে থাকে।
সর্বশেষ রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে কামাল আমার কাছ থেকে গাড়ি কেনার জন্য যৌতুকের টাকা দাবি করেন। আমি দিতে অস্বীকার করায় আমার শ্বাশুড়ি ও স্বামী আমাকে হাত- পা ও মুখ বেঁধে মারধর করে। এবং জ্বলন্ত সিগারেটের আগুন দিয়ে হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ছেকা দেয়।
তাদের নির্যাতনে একপর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তারা মৃত ভেবে ঘর থেকে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে রাতে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে গৃহবধূ তাসলিমা বেগম ভোলা সদর হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের ৬৭ নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে তাসলিমার স্বামী কামালের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছগীর মিঞা জানান, এ বিষয়ে গৃহবধূ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। আমরা আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।
Leave a Reply