শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন
বাউফল প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর বাউফলে যোগদানের পর একদিনের জন্যও কর্মস্থলে যাননি ৩৯তম বিসিএস থেকে নিয়োগ পাওয়া ১২ চিকিৎসক। তারা উপজেলা সদরে ব্যক্তিগত চেম্বার খুলে বসেছেন। ফলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তৃর্ণমূল পর্যায়ের সাধারণ মানুষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে এমবিবিএস চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী বাউফল উপজেলায় ১২টি স্বাস্থ্য ও কল্যাণ কেন্দ্রে ৩৯তম বিসিএসের ১২ জন এমবিবিএস চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর একদিনের জন্যও কর্মস্থলে যাননি। তারা থানা সদরে বসবাস করছেন এবং ব্যক্তিগত চেম্বারে বসে রোগী দেখছেন।
ওই চিকিৎসকরা হচ্ছেন- ডা. এরিনা আফসানা স্বর্ণা, কর্মস্থল বগা; ডা. অমিত কুমার দেবনাথ, কর্মস্থল কনকদিয়া; ডা. মো. মোস্তফা হোসাইন, কর্মস্থল কেশবপুর; ডা. নূপুর আখতার, কর্মস্থল বাউফল সদর ইউনিয়নের বিলবিলাস; ডা. তাসিফুল ইসলাম, কর্মস্থল সূর্যমনি; ডা. মো. তানভির আহম্মেদ, কর্মস্থল নওমালা; ডা. মাহিন বিন কাসেম, কর্মস্থল কালাইয়া; ডা. মো. মাহমুদুল হাসান, কর্মস্থল নাজিরপুর; ডা. মো. সাইফুল ইসলাম, কর্মস্থল আদাবাড়িয়া; ডা. শামিমা আখতার, কর্মস্থল দাশপাড়া; ডা. সুব্রত কুমার বিশ্বাস, কর্মস্থল কাছিপাড়া; ডা. খাদিজা আখতার সুমি, কর্মস্থল ধুলিয়া; ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে হলেও কয়েকদিন আগে তিনি বদলি হয়ে গেছেন। এ চিকিৎসকরা মাঝে মধ্যে কিছু সময়ের জন্য বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অফিসে আড্ডা দেন এবং খোশগল্প করে চলে যান।
বাউফলের কেশবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন লাভলু বলেন, আমার ইউনিয়নে স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ডা. মো. মোস্তফা হোসাইনকে নিয়োগ দেয়া হলেও তিনি কর্মস্থলে আসেন না। একদিন এসেছিলেন, তাও আমি ফোন দিয়ে এনেছিলাম। তিনি না আসায় আমার এলাকার সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছেন।
সূর্যমনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, শুনেছি আমার ইউনিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
কিন্তু একদিনের জন্যও তিনি এখানে অফিস করেননি। এর ফলে আমার এলাকার সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছেন।
ধুলিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান আনিচুর রহমান রব বলেন, আমার ইউনিয়নে একজন চিকিৎসক দেয়া হলেও তিনি যোগদানের পর একদিনের জন্য কর্মস্থলে আসেনসি। পরে শুনেছি তিনি বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
আমার ইউনিয়ন থেকে সদরের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। এখানকার লোকজনের সদরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ওই সব চিকিৎসকদের কর্মস্থলে অফিস করার মতো কোনো পরিবেশ নেই। বসার জন্য কোনো চেয়ার টেবিল নেই। তারপরও সপ্তাহে ২-১ দিন তারা কর্মস্থলে অফিস করেন।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কোনো চিকিৎসক যোগদানের পর কর্মস্থলে না যাওয়ার সুযোগ নেই। কোনো চিকিৎসক না যেয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply