রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন
পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি॥ বরগুনার পাথরঘাটায় স্ত্রী ও ৯ মাসের কন্যাশিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পাথরঘাটা পৌর শহরের পশ্চিমপাশে পূর্ব হাতেমপুর গ্রামে।
প্রেমের সম্পর্ক থেকে দৈহিক মিলন, এরপর সন্তান জন্মদানের পর আদালতে মামলার প্রেক্ষিতে বিয়ে সম্পন্ন হয় প্রেমিক-প্রেমিকার। তারপর এ ঘটনা ঘটল। অভিযুক্ত স্বামী মো. শাহিন একজন জেলে। লাশ সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, গত বুধবার থেকে নিখোঁজ সুমাইয়া ও তার ৯ মাসের শিশু কন্যা সামিরা আক্তার জুঁইকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে থানায় অভিযোগ করা হয়। এরপর পুলিশ তল্লাশি শুরু করে।
শনিবার সকালে পুলিশ আসামির বাড়ির পাশে একটি নির্জন স্থানে মাটি চাপা দেয়া অবস্থায় স্ত্রী ও কন্যার লাশ উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের হত্যা করে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, একই গ্রামের মো. শাহিন ও সুমাইয়ার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের দৈহিক সর্ম্পকে সুমাইয়া গর্ভবতী হন। এরপর স্বজন ও গ্রামবাসীদের চাপে থানায় ধর্ষণ মামলা হয়। পাথরঘাটা থানায় ২০২০ সালের ১৪ জুলাই নারী ও শিশু দমন আইনে মামলা হলে শাহিন গ্রেফতার হয়ে ৩ মাস জেলে থাকেন। পুলিশ সন্তানের পিতৃপরিচয় উদঘাটনের লক্ষ্যে ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নিলে আসামি শাহিন তার স্ত্রী ও স্বজনদের বুঝিয়ে তারা বিয়ে মেনে নিয়েছে মর্মে ডিএনএ পরীক্ষা না করার জন্য পুলিশকে লিখিতভাবে জানান। এরই মধ্যে সুমাইয়ার গর্ভে শাহিনের ঔরসজাত একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে ৯ মাস আগে। বরগুনা নারী-শিশু দমন ট্রাইবুনালে ওই বিচার চলমান অবস্থায় স্ত্রী ও নয় মাসের সন্তান হত্যার ঘটনা ঘটল।
পূর্ব হাতেমপুর গ্রামের প্রতিবেশী ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বহিনীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক বাদশা জানান, স্ত্রীর আবেদনে আদালত থেকে জামিনে ফিরে আসেন স্বামী। ওই কন্যাসন্তান জন্ম গ্রহণের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রতিনিয়ত ঝগড়া লেগেই থাকতো।
নিহত সুমাইয়ার বাবা মো. রিপন হাওলাদার জানান, শাহিনের পরামর্শে গত সেপ্টেম্বর মাসে তার মেয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করানো হয়। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় কোনো কাবিননামা রেজিস্ট্রি হয়নি।
পাথরঘাটা থানার ওসি মো. আবুল বাশার জানান, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়েছে ও ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল হোসেন সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তিনি বলেন, মাটি খুঁড়ে স্ত্রী-সন্তানের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়।
Leave a Reply