রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ প্রায় ৯ মাস ধরে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে রয়েছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। এরপরও নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন তিনি। এমনকি উচ্চ আদালতে বেকসুর খালাস পাওয়ারও স্বপ্ন দেখছেন। আর বলেছেন ‘সত্যের জয় একদিন হবেই’।
গতকাল শুক্রবার মেয়েকে নির্দোষ দাবি করে এসব কথা বলেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। মিন্নি অসুস্থ বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, মিন্নি কোনোভাবেই দোষী না। কোনো পরিকল্পনার সঙ্গেও জড়িত ছিল না। এটা কেউ প্রমাণও করতে পারেনি। কুচক্রি মহল মিন্নিকে এ মামলায় জড়িয়েছে। মিন্নিও আমার কাছে বলেছে, ‘আব্বু আমি দোষী না। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। উচ্চ আদালতে আমি বেকসুর খালাস পাব। সত্যের জয় একদিন হবেই’।
তিনি বলেন, আদালত রায়ে উল্লেখ করেছে- মিন্নি এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী। কিন্তু মিন্নি কোথায় পরিকল্পনা করেছে? পরিকল্পনা যারা করেছে তারা কলেজসহ বিভিন্ন স্থানে পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু এর সঙ্গে মিন্নি ছিল না। মিন্নি যদি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকত বা কোনোভাবেই এটা জানতে পারতো তাহলে কখনোই ওই দিন কলেজে যেত না।
মোজাম্মেল আরো বলেন, মৃত্যুর আগে রিফাত তার বাবার কাছে হামলাকারীদের নাম বলেছে এবং মামলায় মিন্নিকে সাক্ষী করতে বলেছে। রিফাতের কথা অনুযায়ী তার বাবা মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে এসব কথা স্পষ্টভাবে লেখাও রয়েছে। এছাড়া রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ যে সাক্ষী দিয়েছেন সেখানেও এসব কথা উঠে এসেছে।
পরবর্তীতে পুলিশ প্রভাবিত হয়ে বিভিন্ন ধরনের সাক্ষী উপস্থাপন করে মিন্নিকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। মিন্নি আসলেই নির্দোষ। তাই আমি দৃঢ় আশাবাদী- আল্লাহর রহমতে উচ্চ আদালতে আমরা সুফল পাব। এছাড়া আমার জামাইও কোনো অন্যায় করেনি। সেও নির্দোষ ছিল। আল্লাহর রহমতে মিন্নি আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসবেই।
বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৯ সালের এ দিনে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করে তারই স্কুলজীবনের বন্ধু সাব্বির আহম্মেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড ও তার সঙ্গীরা।
আলোচিত এ হত্যা মামলায় নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় আদালত। অপরদিকে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়ায় অপ্রাপ্তবয়স্ক ছয় আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অপ্রাপ্তবয়স্ক চারজনকে পাঁচ বছর এবং একজনকে তিনি বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত এ রায় দেয়। রায় ঘোষণার পর থেকেই কারাগারে রয়েছেন মিন্নি।
রায়ের পর গত বছরের ২৯ অক্টোবর বরগুনা জেলা কারাগার থেকে মিন্নিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে এ কারাগারের কনডেম সেলে রয়েছেন তিনি। করোনার কারণে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে। কিন্তু প্রতি সপ্তাহে একবার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান মিন্নি।
Leave a Reply