জনবল সঙ্কটে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল Latest Update News of Bangladesh

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৭ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
আইপিএল নিলামে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের প্রতি আগ্রহ নেই শেবাচিম হাসপাতালে পরিচালকের দায়িত্ব নিলেন ব্রিঃজেঃ একেএম মশিউল মুনীর ‘সংস্কারের পাশাপাশি অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা জরুরি’ : তারেক রহমান পিরোজপুরে ২৪ বছরেও সম্পন্ন হয়নি আয়রন ব্রিজ নির্মাণ কাজ, জনদূর্ভোগ চরমে বরিশালে তথ্য মেলা: দুর্নীতি প্রতিরোধে জোরালো পদক্ষেপ মমতার বাঁধায় বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশে আলু রপ্তানি ! কাউখালী উপজেলা জামায়াত ইসলামীর কমিটি গঠন বিএনপির শোক মিছিলে হামলা: রিমান্ডে হাসানাতপুত্র মঈন আব্দুল্লাহ খুনি হাসিনার পুনর্বাসন, জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করবে শহীদ ফাউন্ডেশন: সারজিস আলম নতুন কমিশনের দায়িত্ব ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা: রাষ্ট্রচিন্তা পরিষদ




জনবল সঙ্কটে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল

জনবল সঙ্কটে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল

জনবল সঙ্কটে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল




বরগুনা প্রতিনিধি॥ বরগুনা ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালটিতে যোগ হয়েছে আরো দেড়শ’ শয্যা। হাসপাতালের নতুন ভবনটির কাজ এখনো অসমাপ্ত। কিন্তু করোনার সঙ্কটময় মুহূর্তে নতুন ভবনটিকে নাম মাত্র উদ্বোধন করে করোনা রোগীদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। নতুন দেড়শ’ শয্যাতো দুর, পুরোনো শতাধিক শয্যাতে লেগেই আছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও অবকাঠামোগত জনবল সঙ্কট। বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতে এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বহুবার রিপোর্ট করা হয়েছে। স্থানীয় সাংসদও ব্যর্থ হয়েছেন এ সমস্যা সমাধানে।

 

 

করোনাকালীন সময়ে এই ভোগান্তীময় উপকূলের একমাত্র ভরসা হিসেবে নিরলস চিকিৎসা দিয়েছেন হাসপাতালটির জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মো. কামরুল আজাদ।

 

 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১ম থেকে ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত মোট মঞ্জুরীকৃত ২শ’ ৩টি পদের মধ্যে ১শ’ ১০টি পদই শূন্য রয়েছে। কর্মরত রয়েছে মাত্র ৯৩ জন। এত কম সংখ্যক চিকিৎসক ও ব্যবস্থাপনা জনবল দিয়ে জেলা শহরের মতো একটি হাসপাতাল কিভাবে পরিচালনা সম্ভব! এমন প্রশ্ন এই জেলার সকল মানুষের মনে।

 

 

বরগুনা সদর হাসপাতালটিতে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের মধ্যে চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদ মোট ৪৩টি। তত্ত্বাবধায়কসহ রয়েছে মাত্র ৯ জন। বাকি ৩৪টি পদই শূন্য। যেখানে সিনিয়র কনসালটেন্ট ১০টি পদের পুরোটাই শূন্য রয়েছে। অন্যদিকে জুনিয়র কনসালটেন্ট আছে মাত্র ৪ জন। থাকার কথা ছিলো মোট ১১ জন। হাসপাতালটিতে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ১ জন, ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার (আইএমও) ৩ জনে রয়েছে মাত্র ১ জন, মেডিকেল অফিসার (এমও) ৪টি পদই শূন্য। সহকারী সার্জন ৮ জনে রয়েছে মাত্র ১ জন। ডেন্টাল সার্জন ১টি পদের ১টিই শূন্য। প্যাথলজিস্ট ও রেডিওলজিস্ট দু’টিই শূন্য। মেডিকেল অফিসার (হোমিও) পদটি নিটল ক্লিন।

 

 

সূত্রে আরো জানান, মেডিকেল অফিসার ও সহকারি সার্জন মোট ১৫ জন সদর হাসপাতালটিতে সংযুক্তিতে (প্রেশন) রয়েছে। তবে শুক্রবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র। সংযুক্তিতে কর্মরত ৪ উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) আউটডোরে রোগী দেখার একমাত্র ভরসা স্থল। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সংযুক্তিতে থাকা চার স্যকমো দ্বারাই চিকিৎসা দিয়ে দ্বায় সারছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন হাসপাতালটিতে আউটডোরে ৫ থেকে ৬শ’ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। করোনার এমন সংকটময় মুহূর্তে কাউকেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। ছিলো না কর্তৃপক্ষেরও কোনো ভূমিকা।

 

 

ইনডোরে প্রতিদিন চলি­শ থেকে পঞ্চাশ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। হাসপাতালটির পরুষ, নারী ও শিশু ওয়ার্ডেও নেই কোন টেকসই ব্যবস্থা। রোগীর সাথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অধিক লোক প্রবেশ করছে ওয়ার্ডগুলোতে।

 

 

অন্যদিকে, হাসপাতালটিতে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যবস্থ্যাপনায় মঞ্জুরীকৃত পদ মোট ৮৯টি। যেখানে ৩৩টি পদই শূন্য। রয়েছে মাত্র ৫৬টি। যার মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ১টি। পরিসংখ্যান কর্মকর্তা পদটি শূন্য। নার্সিং সুপারভাইজার ২ জনে রয়েছে ১ জন। সিনিয়র স্টাফ নার্স ৭৪টি পদে রয়েছে মাত্র ৫২টি। ২২ পদই শূন্য। স্টাফ নার্স ১১টি পদের ৯টিই শূন্য। রয়েছে মাত্র ২ জন।

 

 

তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যে প্রধান সহকারি থেকে শুরু করে টিকেট ক্লার্ক এর মধ্যে কম্পিউটার অপারেটর পদটি শূন্য রয়েছে। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব.) ৫টি পদের ২টি, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল) ২টি পদের ১টি, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফী) ৩টি পদের ২টি, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফার্মাসিষ্ট) ৩টি পদের ৩টি, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফিজিওথেরাপী) ২টি পদের ২টি, সহকারি নার্স ৫টি পদের ৫টি, লিলেন কিপার ১টি পদের ১টি, ইনস্ট্রুমেন্ট কেয়ার টেকার ১টি পদের ১টি শূন্য।

 

 

আবার দেখা গেছে, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যে অফিস সহায়ক ৫টি পদের নেই মাত্র ১টি, বাবুর্চি/সহকারি বাবুর্চি ৩টি’র মধ্যে নেই মাত্র ১টি, স্ট্রেরিলাইজার কাম মেকানিক, ডার্করুম সহকারি পদ দু’টি শূন্য। আউটসোর্সিং এ জনবল কাঠামোতে ২০টি পদের সবগুলো পদই শূন্য রয়েছে।

 

 

বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয়

 

 

চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদে ৩ জনে রয়েছে মাত্র ১ জন। ২য় শ্রেণির ৫টি পদে রয়েছে মাত্র ৩ জন। ২য় শ্রেণির চারটি পদই পূরণ রয়েছে। ৩য় শ্রেণিতে ১৩ জনে রয়েছে মাত্র ৯ জন। তবে চতুর্থ শ্রেণির ১টি পদ শূন্য রয়েছে।

 

 

বরগুনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়

 

 

চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদে ১৩ জনে রয়েছে মাত্র ৯ জন। ১ম শ্রেণির (নন-মেডিকেল) ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদ সৃষ্ট হয়নি। ৩য় শ্রেণিতে ১শ’ ৩১ জনে রয়েছে মাত্র ১শ’ ১৫ জন ও চতুর্থ শ্রেণিতে পূরণ রয়েছে।

 

 

বরগুনা জেলার অন্য পাঁচ উপজেলারও একই হাল, একটিতেও ১ম শ্রেণি (নন মেডিকেল) পদগুলো সৃষ্টি হয়নি।

 

 

তালতলী ও আমতলী

 

 

তালতলীতে নামে মাত্র ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল থাকলেও হয়ে আছে জাদুঘর। স্থানীয়রা আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপর নির্ভর করলেও এখানে চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদে ৩৯ জন থাকলেও কর্মরত রয়েছে মাত্র ২০ জন। ২য় শ্রেণির ৩৩টি পদে রয়েছে মাত্র ২৭ জন। ৩য় শ্রেণিতে ১শ’ ৩৭ জনে রয়েছে মাত্র ৯০ জন ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৪১ জনে রয়েছে মাত্র ২৮ জন।

 

 

পাথরঘাটা

 

 

এখানে চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদে ২৮ জনে রয়েছে মাত্র ১৫ জন। ২য় শ্রেণির ২৪টি পদে রয়েছে মাত্র ১৯ জন। ৩য় শ্রেণিতে ১শ’ ৬ জনে রয়েছে মাত্র ৬৩ জন ও চতুর্থ শ্রেণিতে ২৩ জনে রয়েছে মাত্র ১৩ জন।

 

 

বেতাগী

 

 

চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদে ২৮ জনে রয়েছে মাত্র ১০ জন। ২য় শ্রেণির ২৪টি পদে রয়েছে মাত্র ১৭ জন। ৩য় শ্রেণিতে ৯১ জনে রয়েছে মাত্র ৬৪ জন ও চতুর্থ শ্রেণিতে ২৩ জনে রয়েছে মাত্র ১৭ জন।

 

 

বামনা

 

 

এখানে চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদে ১৪ জনে রয়েছে মাত্র ৭ জন। ২য় শ্রেণির ১৮টি পদে রয়েছে মাত্র ১২ জন। ৩য় শ্রেণিতে ৫৮ জনে রয়েছে মাত্র ৪৫ জন ও চতুর্থ শ্রেণিতে ১৯ জনে রয়েছে মাত্র ১৩ জন।

 

 

বরগুনাবাসী বলছেন, মানুষের মৌলিক অধিকার তার চিকিৎসা। কিন্তু স্বাস্থ্য খাতের মধ্যে দক্ষিণের সাগরঘেঁষা এ উপকূলসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতেই রয়েছে এমন কঠিন সমস্যা। যা সমাধান হওয়াটা অতি জরুরি। কিন্তু কোথায় এর সমাধান? সরকারের দৃষ্টি আর্কষণ করে বলেন, চিকিৎসাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোকে অতি শীঘ্রই সেকর খেকে সর্বোচ্চ শিখরে নেয়া দরকার। তা না হলে এর ভোগান্তী পোহাতে হবে সাধারণ মানুষের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য।

 

 

১০০ শয্যা বিশিষ্ট বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোহরাব উদ্দীন বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অসংখ্য বার চিঠির মাধ্যমে জেলা সদরের এই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও অন্যান্য জনবল সঙ্কট সম্পর্কে অবগত করা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু মহোদয়ও চেষ্টা করেছেন। তবে চিকিৎসক না থাকার মূল কারণ বরিশাল ডিভিশনের মধ্যে তাদের বাড়ি না হওয়ায় বিভিন্ন তদবিরের মাধ্যমে আসার আগেই চলে যায়। বদলী ও পদোন্নতির সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারব।

 

 

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও জনবল অবকাঠামোগত সঙ্কট নিয়ে বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন শাহীন খান বলেন, বরগুনা জেলা সদরসহ বাকি পাঁচ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও একই সমস্যা লেগে আছে।

 

 

চিকিৎসকদের ঢাকামুখি প্রবণতা ফেরাতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি সরকারের নীতিমালায় পরিবর্তন ও জাতীয় পর্যায় গাইড লাইন দরকার। তদবির ছাড়া অটো বদলী ও পদোন্নতি হতে হবে। উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে চাকরির ধাপগুলো সমন্বয় করা, সঠিক পদবিন্যাস ও পরিকল্পনাই পারে এ সমস্যা থেকে বের করে আনতে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD