শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ চাঁদপুরে বেড়েই চলেছে বেপরোয়া কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য। দিন দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যরা। চাঁদপুরের বিভিন্ন এলাকার স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ছোট-বড় গ্রুপে ভাগ হয়ে চুরি, ছিনতাই, লুটপাট, মারামারি, যৌন-হয়রানি, মাদকসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
শুধু তাই নয়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে এক গ্রুপের সদস্যরা অন্য গ্রুপের সদস্যদের খুন করতেও দ্বিধাবোধ করছে না। পারিবারিক শিক্ষা, করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ দিন থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ও নৈতিক শিক্ষার অভাবে কিশোর গ্যাং বিভিন্নভাবে নানান অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
এছাড়াও, বেশ কয়েক বছর ধরে চাঁদপুর শহরের বিভিন্নস্থানে আইকা গামের ড্যান্ডি নেশার কার্যক্রমে কিশোরদের রাস্তাঘাঠে দেখা গেছে। প্রায়ই দেখা যায় চাঁদপুর রেলওয়ে কোট স্টেশন, রেলওয়ে বড় স্টেশন এবং ছায়াবানী মোড়সহ শহরের বিভিন্নস্থানে অবস্থানরত টোকাই, ভিক্ষুক ও ছিন্নমূল পথশিশু, কিশোর-কিশোরীরা শহরের বিভিন্ন হার্ডওয়ারের দোকান থেকে জুতা ফরমিকায় লাগানো আইকা গাম ক্রয় করে তা পলিথিনে ঢুকিয়ে নাক, নাক ও মুখ দিয়ে সেই গামের গ্যাস টেনে নেশায় আসক্ত হচ্ছে। এদের বয়স ১০/১২ বছর থেকে শুরু করে ১৫/১৬ বছর বয়সী।
গত কদিন ধরে জেলা শহরে অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটনায় এবার নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সর্বশেষ গতকাল রোববার শহরের এসবি খাল থেকে মোঃ ইউসুফ বেপারী ওরফে খোকা (২৫) নামে এক ছিন্নমূল যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ। সেও এই ড্যান্ডি নেশায় আসক্ত ছিলেন বলে জানা গেছে।
এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মাত্র ৫শ’ টাকার লেনদেন নিয়ে বড়স্টেশন এলাকায় কিশোরগ্যাংয়ের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।এসময় চাঁদপুর মাছঘাট এলাকার রেল স্টেশনের জানালার গ্লাস, সিসি ক্যামেরাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে উভয় গ্রুপ।
এ ঘটনার শনিবার দিনভর বড়স্টেশনসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নাসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে সাঁড়াশি অভিযানে ১৫ কিশোরকে আটক করা হয়। পরে যাচাই-বাছাই শেষে অভিভাবকদের উপস্থিতিতে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
‘সন্ধ্যার পর শিশু-কিশোররা পাড়ার অলিতে-গলিতে থাকবেনা, থাকবে পড়ার টেবিলে’ এই নীতিতে তৎপর হয়েছে পুলিশ। চাঁদপুরের নবাগত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিগ্ধা সরকার জানান, ‘আমরা ইতিমধ্যে চাঁদপুর শহরে কিশোর গ্যাং রোধ করতে গুরত্ব সহকারে কাজ করছি। একই সাথে গাঁজা, ইয়াবা সহ যেসব মাদক গুলো বেশি ছড়াছড়ি সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। আজকের পর থেকে কোন শিশু কিশোর রাস্তায় বিনা কারনে ঘুরাঘুরি এবং যেখানে সেখানে বেপরোয়া ভাবে অবস্থান করতে পারবে না। সন্দেহজনক মনে হলেই গ্রেফতার করা হবে এই বিষয় নিয়েই আমরা কাজ শুরু করেছি’। তিনি আরও জানান, ‘চাঁদপুর শহর শান্তির শহর কিছুতেই এ শহরকে অশান্ত করা যাবে না, আমাদের এ ধরনের অভিযান জানান চলমান থাকবে’।
Leave a Reply