সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০২ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ ত্রাণ দেয়ার কথা বলে নারী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য হাফসা বেগমের স্বামী মো: আবু কালাম হাওলাদারের বিরুদ্ধে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউপি সদস্য ও তার স্বামীর ভয়ে ধর্ষিতা ও তার পরিবার পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। শুক্রবার রাতে কালামের শ্যালক সেলিম তালুকদার ও তার লোকজন ধর্ষিতার স্বামীকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন এমন অভিযোগও করেছেন ভুক্তভোগীর স্বামীর। গত বুধবার রাতে আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ দিকে ঘটনার চার দিন পেরিয়ে গেলেও প্রভাবশালী ইউপি সদস্যের লোকজনের ভয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার আইনি পদক্ষেপ নিতে সাহস পাচ্ছে না। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী অভিযুক্তের বিচার দাবি করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য হাফসা বেগমের স্বামী আবু কালাম হাওলাদার ঘোপখালী গ্রামের এক নারীকে ত্রাণ দেয়ার কথা বলে বুধবার রাতে ওই নারীর বাড়িতে যান। এ সময় ভুক্তভোগীর (দিনমজুর) স্বামী বাড়িতে ছিল না। এই সুযোগে ওই নারীকে আবু কালাম হাওলাদার ধর্ষণ করেন। পরে ওই নারীকে শাসিয়ে দেন এই ঘটনা কাউকে জানালে তাকে ও তার পরিবারকে মেরে ফেলবে। কিন্তু ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হন আবু কালাম।
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, নারী ইউপি সদস্যের স্বামী ও তার লোকজনের ভয়ে ওই নারী ও তার পরিবার পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর স্বামী। এ দিকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন। তারা ভুক্তভোগী ও তার স্বামীকে আইনি পদক্ষেপ নিতে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। তাদের ভয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার আইনি পদক্ষেপ নিতেও সাহস পাচ্ছে না। এ দিকে শুক্রবার রাতে কালামের শ্যালক মো: সেলিম তালুকদার ও তার লোকজন ভুক্তভোগীর স্বামীকে তুলে নিয়ে সাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর রেখেছেন এমন অভিযোগ করেন ধর্ষিতার স্বামী।
ওই নারী মুঠোফোনে বলেন, ‘ত্রাণ দেয়ার কথা বলে নারী ইউপি সদস্য হাফসা বেগমের স্বামী আবু কালাম হাওলাদার মঙ্গলবার রাতে আমার বাড়িতে আসেন। ওই সময় আমার স্বামী বাড়িতে ছিল না। এই সুযোগে আমাকে ধর্ষণ করেন। আমি মানইজ্জতের ভয়ে কাউকে এ বিষয়টি জানাইনি। কিন্তু বুধবার রাতে আবারো এসে আমাকে ধর্ষণ চেষ্টা চালান। এ সময় আমি চিৎকার দিলে তিনি পালিয়ে যান।’
তিনি আরো বলেন, ‘কামাল আমাকে শাসিয়ে যান এ ঘটনা কাউকে জানালে আমাকে ও আমার পরিবারকে মেরে ফেলবে। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার তার ভয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
ধর্ষণের শিকার ওই নারীর স্বামী বলেন, ‘শুক্রবার রাতে কালামের শ্যালক সেলিম তালুকদার ও তার লোকজন আমাকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য কালামের পক্ষ নিয়ে একটি প্রভাবশালী মহল আমাকে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন যাতে আমি আইনি পদক্ষেপ নিতে না পারি।’
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ আব্দুল খালেক বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এ ঘটনা আমতলী থানা পুলিশকে জানিয়েছি।’
অভিযুক্ত আবু কালাম হাওলাদার ধর্ষণের ঘটনা এবং ধর্ষিতার স্বামীকে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’
আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো: হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
Leave a Reply