৮২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বেকুটিয়া সেতু Latest Update News of Bangladesh

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




৮২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বেকুটিয়া সেতু

৮২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বেকুটিয়া সেতু

৮২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বেকুটিয়া সেতু




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের বেকুটিয়া সেতু নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে সেতুর ৮টি পিলার স্থাপনসহ ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যে কাজের শতভাগ শেষ হওয়ার আশা করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সেতুটি নির্মিত হলে বরিশালের সঙ্গে খুলনায় সড়কপথে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগব্যবস্থা চালু হবে।

 

 

পিরোজপুর শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে বেকুটিয়া ফেরিঘাটের কাছে সেতুটি নির্মিত হচ্ছে। ৯৯৮ মিটার দৈঘ্যের ও ১৩ দশমিক ৪০ মিটার প্রস্থের সেতুতে ৯টি স্প্যান স্থাপন করা হবে। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর পাল্টে যাবে পিরোজপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির চিত্র। সেতুটি নির্মাণের ফলে দেশের সব এলাকার সঙ্গে পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ তৈরি হবে। আর এতে করে পিরোজপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলে গড়ে উঠবে নতুন নতুন কলকারখানা। পদ্মা সেতুর সঙ্গেই এ সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় উন্নয়নের ক্ষেত্রে দক্ষিণাঞ্চলে যোগ হবে নতুন মাত্রা।

 

 

পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) অফিস সূত্রে জানা গেছে, চীন সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় প্রায় ৮২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালে ৯৯৮ মিটার দীর্ঘ এ সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করে চীনের একটি বেসরকারি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান, যা ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নির্ধারিত সময়ে সেতুটি নির্মাণ করা সম্ভব না হওয়ায় আগামী ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন পিরোজপুর সওজ বিভাগের কর্মকর্তারা। ৮টি পিলার ও ২টি ভায়াডাক্ট এর ওপর ৯টি স্প্যান দিয়ে নির্মিত এ সেতুটির দুই পাশে প্রায় ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক থাকবে। চীন ও দেশের শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। কচা নদীর মধ্যে আটটি পিলার এরই মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। এখন সেতুর দুই প্রান্তের দুটি পিলার নির্মাণের কাজ চলছে।

 

 

বেকুটিয়া ফেরিঘাটের আশপাশে বসবাসকারী কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কচা নদীর প্রশস্ততা এক কিলোমিটার হওয়ায় ফেরি পারাপারে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লাগে। বর্ষাকালে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি ও স্রোত বেড়ে গেলে আরও বেশি সময় লেগে যায় পারাপারে। এ ছাড়া ফেরিগুলো পুরোনো ও জরাজীর্ণ হওয়ায় প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে। বৈরী আবহাওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। বেকুটিয়া ফেরিঘাটের ইজারাদার আজমির হোসেন বলেন, পিরোজপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এই সেতু। এটি নির্মিত হলে আশপাশে বাণিজ্যের পরিধি বাড়বে। আর শিল্পকারখানা নির্মিত হলে স্থানীয় লোকজন সেখানে কাজ করতে পারবেন।

 

 

এ বিষয়ে পিরোজপুর সওজ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন জানান, সেতুটির সবপিলার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজও দ্রæতগতিতে এগিয়ে চলছে। এ পর্যন্ত সেতুটির ৬০ ভাগের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

এ ছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সেতুটির কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা তার। তবে সেতুটি কাজ উদ্বোধনের সময় প্রকাশিত ‘৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু’ শিরোনামের স্মারক বই থেকে আরো জানা যায়, একটি টোল প্লাজা, সেতুর দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক, পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি ১২ মিটার সেতু ও বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। সেতুটি নদীর তলদেশ থেকে ২৮ দশমিক ৯৮ মিটার উঁচু হবে। ৮২১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে চায়না রেলওয়ে-১৭ ব্যুরো গ্রæপ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ করছে। মোট বরাদ্দের ৬৫৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা চীন সরকার ও ১৬৭ কোটি ৪ লাখ টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার। সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগব্যবস্থা তৈরির জন্য চীন সরকারের অনুদানে সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে সেতু নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। এই সেতু নির্মিত হলে আশপাশে বাণিজ্যের পরিধি বাড়বে। আর শিল্পকারখানা নির্মিত হলে স্থানীয় লোকজন সেখানে কাজ করতে পারবেন।

 

 

এদিকে দীর্ঘদিনের সীমাহীন দুর্ভোগ লাঘব হতে যাওয়ায় এ অঞ্চলের ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মুখে-মুখে এখন পদ্মা ও বেকুটিয়া সেতু। বেকুটিয়া সেতুর কাজ সমাপ্ত হলে বেকুটিয়া নৈকাঠী ও চরখালী-টগড়া এ দুটি ফেরি সার্ভিসের আর কোন প্রয়োজন হবে না। এদিকে দেশের একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দর পায়রা এবং সমুদ্র সৈকত সাগর কন্যা কুয়াকাটার সাথে সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল এবং সমুদ্র বন্দর মংলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করবে এই বেকুটিয়া সেতুটি।

 

 

পিরোজপুরের সম্মিলিত ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা নকিব বলেন, বেকুটিয়া সেতুটি উন্মুক্ত হলে এ অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে এক ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হবে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান অকল্পনীয়ভাবে উন্নীত হবে। বর্তমানে কঁচা নদী পার হতে বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের বরিশাল-পিরোজপুর-খুলনা আঞ্চলিক সড়কের কুমিরমারা-বেকুটিয়া ফেরিটি ব্যবহার করতে হয়। কোনো কারণে একটি ফেরি ধরতে না পারলে তাদের সেখানে কমপক্ষে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। আর গাড়ির লাইন দীর্ঘ হলে তো কথাই নেই। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় রাতের বেলা। তবে সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে সাধারণ মানুষকে এ ভোগান্তি পোহাতে হবে না আর উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে উন্নয়নবঞ্চিত দক্ষিণাঞ্চলের এ জেলায়। খুব অল্প সময়েই যানবাহনগুলো তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD