সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৭ অপরাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি॥ অধিক মুনাফার প্রলোভনে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছে এহ্সান গ্রুপ পিরোজপুরের ১০ হাজার গ্রাহক। গচ্ছিত রাখা এসব টাকা উদ্ধারের জন্য সংস্থাটির কাছে ধরনা দিয়ে ব্যর্থ হয়ে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন গ্রাহকরা। আর জেলা প্রশাসন বলছে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবো।
পিরোজপুর সদরের খলিশাখালী এলাকার আব্দুর রব খানের বড় ছেলে মুফতি রাগীব আহসান ২০১০ সাল থেকে এহ্সান রিয়েল এস্টেট নামীয় একটি এমএলএম কোম্পানি শুরু করেন। ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে টাকা সংগ্রহ শুরু করেন। এক লাখ টাকার বিপরীতে গ্রাহকদের মাসে ২ হাজার টাকা মুনাফার প্রলোভন দিয়ে প্রায় ১০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
একটি মসজিদে নামমাত্র বেতনে ইমামতি করা রাগীব এর আগে এমএলএম কোম্পানিতে চাকরি নেন। পরবর্তীতে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই পিরোজপুরে এহ্সান রিয়েল এস্টেট নামে একটি কোম্পানি গড়ে তোলেন পরবর্তীতে যা এহ্সান গ্রুপ পিরোজপুর বাংলাদেশ নামে পরিচিতি পায়। এর অধীনে রাগীব গড়ে তোলেন ১৪টি প্রতিষ্ঠান।
আবুল কালাম, রিনা বেগম, মসজিদের ইমাম রফিক মোল্লাসহ বেশকিছু গ্রাহক জানান, শুরুর পর কয়েক বছর ঠিকমত গ্রাহকদের সঙ্গে লেনদেন স্বাভাবিক রাখলেও প্রায় ২ বছর ধরে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধে টালবাহনা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর তাদের অফিসের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। পাশাপাশি আত্মগোপনে চলে যান রাগীবসহ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। আর গ্রাহকরা ঘুরতে থাকেন তাদের দ্বারে দ্বারে। তবে নিজেদের গচ্ছিত টাকা না পেয়ে অসহায় মানুষগুলোর মাঝে বিরাজ করছে অজানা আতঙ্ক।
এহ্সান গ্রুপের অধীন একটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সমবায় অধিদফতর থেকে নেয়া হয়েছে। সেখানে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহে অনিয়ম ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সমবায় অফিসার মো. মুজিবুল হক।
এদিকে এহসান গ্রুপের জালিয়াতির এ বিষয়টি তদন্তে ধরা পড়েছে বলে জানান পিরোজপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি এবং তদন্ত কমিটি সদস্য মুনিরুজ্জামান নাসিম আলী।
তবে সমবায় দফতর থেকে নেয়া লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে আমানত সংগ্রহ করায় তা গ্রাহকদের ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক আবু আলী মোহাম্মাদ সাজ্জাদ হোসেন। পাশাপাশি জনগণকে তাদের সঙ্গে লেনদেন না করার আহ্বানও জানান তিনি। তবে অভিযোগের বিষয়ে এহসান গ্রুপের কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের জোর দাবি, তাদের গচ্ছিত রাখা টাকা ফিরিয়ে দিতে প্রশাসন যেন পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
Leave a Reply