শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন
এম. কে. রানা, নিজস্ব প্রতিনিধি॥ করোনা ২য় ধাপ মোকাবেলায় বরিশালে সাধারণ মানুষ অনেকটাই উদাসীন। বেশির ভাগ মানুষই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। প্রশাসনের ভয়ে অনেকে মাস্ক সাথে রাখলেও তা ব্যবহার করছেন না। ফলে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে হাসপাতালে রোগী বেড়েছে কয়েকগুণ।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (শেবাচিম)’র করোনা ইউনিটে গত সপ্তাহে ১০জন করোনা আক্রান্ত রোগী থাকলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত তা দাঁড়িয়েছে ৫৪জনে।
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ব্যানার ফেস্টুন টানিয়ে মানুষকে সচেতন করলেও সাড়া নেই সাধারণ মানুষের। তাই অভিযান চালিয়ে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সরেজমিনে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও বিপনী বিতানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। যদিও বরিশাল জেলা প্রশাসন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন করোনা বিস্তাররোধে কাজ করছে। কিন্তু তাদের সচেতনতা বার্তা, কঠোর নজরদারি কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না সাধারণ মানুষ। বেশির ভাগ মানুষই মাস্ক ব্যবহার না করে কানে/থুতনিতে ঝুলিয়ে রাখে। এছাড়া নিরাপদ দূরত্ব না মেনেই দৈনন্দিন কাজকর্ম করে যাচ্ছেন তারা। নগরীর বিভিন্ন শপিংমল, জামাকাপরের দোকান, কাঁচাবাজার এবং ফুটপাতের ব্যবসায়ী কারো মুখেই মাস্ক নেই। একই হাল বিক্রেতাদেরও। অনেককেই রাস্তার পাশে চায়ের দোকান ও হোটেল রেস্তোরায় আড্ডা দিতে দেখা যায়। কেউবা আবার সন্তান কোলে নিয়েও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলাফেরা করছেন।
নগরীর নতুনবাজারে আসা ক্রেতা লাবনী বেগমকে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে বলেন, মাস্ক পরতে কেমন একটা অস্বস্তি লাগে। রূপাতলী বাসস্ট্যাণ্ডের পাশে চায়ের দোকানে আড্ডারত যুবক রায়হান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য মাস্ক পরা উচিত, কিন্তু মাস্ক পরলে মুখ ঘেমে একটা অস্বস্তি তৈরি হয়। তাই মাস্ক ছাড়াই চলাচল করি। নগরীর চকবাজারে কসমেটিক্স কিনতে আসা এক তরুণী বলেন, “আমি মাস্ক পরে এসেছি, কিন্তু সবাইতো আর মাস্ক পড়ছেন না। আমাদের সবারই এ সময় একটু সাবধান হয়ে চলাফেরা করা উচিত। হাসপাতাল রোডে ওষুধ বিক্রেতা সঞ্জয় রায় বলেন, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা এবং একসাথে দুই জনের বেশি প্রবেশ নিষেধ করলেও অনেকেই এসব কথা শুনছে না।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলী সুজা বলেন, এতে অভিযান আর সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পরও মানুষের মধ্যে মাস্ক পরিধানে অনিহা লক্ষ্য করছি। আমরা এজন্য জরিমানাও করা হচ্ছে বলেন তিনি। বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না। আমার আহ্বান থাকবে সব যায়গায় সকল মানুষ যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন।বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন সবাইকে স্বাস্থ্যবিবি মেনে চলার পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, “আমরা নগরীর প্রায় সব স্থানেই করোনা সতর্কমূলক পোষ্টার, লিফলেট, ফেস্টুন দিয়ে সতর্ক করার চেষ্টা করছি। নিজের জীবনের অথবা পরিবারের স্বার্থে হলেও মাস্ক পরাটা খুবই জরুরী উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রয়োজনে আইনের কঠিন প্রয়োগ করবো। তাছাড়া চলমান ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেন তিনি।এদিকে মহামারি করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় জনসমাগম স্থলে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি মাস্ক পরিধান আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া মাস্ক ছাড়া কাউকে ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
Leave a Reply