বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪২ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে অর্ধেকেরও কম যাত্রী পরিবহনে বাধ্য হচ্ছেন এমন অজুহাতে লঞ্চ ভাড়া ৬৯ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা। ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান বরাবর গত রোববার আবেদন করেছে লঞ্চ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থা। আবেদনে ২৭ জুনের মধ্যে ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব কার্যকরের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
বর্তমানে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সা হারে লঞ্চ ভাড়া আদায় করছেন মালিকরা। ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে কিলোমিটারপ্রতি যাত্রী ভাড়া ৫৬ শতাংশ বাড়িয়ে ২ টাকা ৬৬ পয়সা নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। একইভাবে ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে কিলোমিটারপ্রতি বর্তমান ভাড়া ১ টাকা ৪০ পয়সা। এটি ৬৯ শতাংশ বাড়িয়ে ২ টাকা ৩৬ পয়সা করার দাবি জানিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।
মালিকরা বলছেন, সাধারণ ছুটিতে দুই মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গত ৩১ মে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। তখন থেকেই তারা ভাড়া বাড়ানোর আবেদন করে আসছেন। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর ‘ধীরে চলো’ নীতির কারণে লঞ্চ পরিচালনা বন্ধ করে দেয়ার উপক্রম হচ্ছে।
লঞ্চে যাত্রী কম হওয়ার তথ্য দিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারাও। জানতে চাইলে সংস্থাটির সদরঘাট টার্মিনালের যুগ্ম মহাপরিচালক আলমগীর কবির বণিক বার্তাকে বলেন, বর্তমানে ঢাকার সদরঘাট থেকে ৫৫-৬০টি লঞ্চ দেশের বিভিন্ন রুটে যাতায়াত করছে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন দেড়শর বেশি লঞ্চ চলত। তিনি জানান, সাধারণ ছুটির পর যখন লঞ্চ চলাচল শুরু হয়, তখন লঞ্চে ভালোই যাত্রী হতো। কিন্তু বর্তমানে যাত্রীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
যাত্রী কম হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে, ভাড়া বৃদ্ধির কারণ হিসেবে এমনটাই জানিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা। বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান বরাবর করা আবেদনে লঞ্চ মালিকরা উল্লেখ করেন, ২৯ মে লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা সাপেক্ষে লঞ্চ ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসে। জুনের মধ্যে ভাড়া বাড়ানোর সুপারিশ সংবলিত একটি প্রতিবেদন তৈরি করে তা বিআইডব্লিউটিএতে জমা দেয়ার জন্য সেদিন একটি কমিটিও গঠন করে দেয়া হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার চেয়ারম্যান মাহবুব উদ্দিন আহমদ স্বাক্ষরিত আবেদনে লঞ্চ মালিকরা অভিযোগ করেছেন, এখনো পর্যন্ত লঞ্চ ভাড়া বাড়ানো না হলেও স্বাস্থ্যবিধির অজুহাতে বিভিন্ন বন্দর ও ঘাটে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন লঞ্চে ধারণক্ষমতার অর্ধেকেরও কম যাত্রী পরিবহনে বাধ্য করছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে লঞ্চগুলোকে জরিমানাও করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় প্রত্যেক নৌরুটেই লঞ্চ পরিচালনা করতে গিয়ে মালিকরা লোকসানের মুখে পড়ছেন। লোকসানে পড়ে অনেকেই লঞ্চ চালানো বন্ধও করে দিয়েছেন। এমন অবস্থায় ২৭ জুনের মধ্যে প্রস্তাবিত বর্ধিত ভাড়া কার্যকরের অনুরোধ জানিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার চেয়ারম্যান মাহবুব উদ্দিন আহমদ বলেন, বর্তমানে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে লঞ্চ চালিয়ে তেলের টাকাই তোলা যাচ্ছে না। ভাড়া না বাড়ানো হলে লঞ্চ মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই আমরা যৌক্তিক হারে ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি।
Leave a Reply