মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি॥ বর্ষায় নতুন পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে খাল-বিল, নদ-নদীতে দেখা মেলে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীও প্রজাতির মাছের আনাগোনা। আর এসব মাছ ধরতে ব্যবহার হয় চাই বা দুয়ারি। পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠীতে জমে উঠেছে এসব মাছ ধরার যন্ত্রের হাট। সপ্তাহের রোব ও সোমবার এই দুদিন বন্দর বাজারে হাজার হাজার মাছ ধরার চাই খুচরা ও পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জানা গেছে, নাজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অনেক পরিবার চাই ও দুয়ারি তৈরির সঙ্গে জড়িত। বছরের বর্ষা মৌসুমের ৬ মাস তারা এ মাছ ধরার যন্ত্র তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকেন। তল্লা ও কালী জিরা বাঁশ দিয়ে এ যন্ত্র তৈরি করা হয়। একটি বাঁশ দিয়ে ১০ থেকে ১২টি চাই তৈরি করা হয়। তবে একজন কারিগর একদিনে ৫ থেকে ৬ টির বেশি চাই তৈরি করতে পারে না।
প্রতি রোব ও বুধবার হাটে এ মাছ ধরার যন্ত্র বিক্রি হয়। বাজারে ১শ’ চাই ৪ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। এ ছাড়া একটি চাই ৪০ টাকা থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এসব যন্ত্র তৈরির জন্য একটি বাঁশ কেনেন ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। এ যন্ত্রে ছোট মাছসহ বেশির ভাগে চিংড়ি মাছ আটকা পাড়ে।
চাই তৈরির কারিগর আনন্দ মিস্ত্রী জানান, তার পরিবারের সবাই মিলে বর্ষা মৌসুমের ছয় মাস চাই তৈরির কাজ করেন। বাঁশ কেনা থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ চাই তৈরি করতে যে কষ্ট আর খরচ হয় সে তুলনায় লাভ বেশি হয় না। তবে এ শিল্প এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। দিন দিন খাল-বিল নদীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় মাছ শিকারীর সংখ্যাও কমে গেছে। যার কারণে চাইয়ের চাহিদাও কমে গেছে।
বর্তমান সব জিনিসের দাম বেশি সে তুলনায় চাইয়ের দাম ভাল পাচ্ছেন না। এ শিল্প বাঁচাতে সরকার ঋণ দিলে কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে পারতাম। চাই ক্রেতা মো. সোলাইমান ব্যাপারী জানান, পাইকারী ও খুচরা ভাবে চাই কিনি। তবে আগের থেকে চাই এর চাহিদা তুলনামূলক অনেকটাই কমে গেছে। আগের মতো চাই মানুষ কিনে না। অনেক ঘুরে ঘুরে চাই বিক্রি করতে হয়।
ভয়েস অব বরিশাল /এইচ এম হেলাল
Leave a Reply