সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫১ অপরাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি॥ ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডস্থ চরটিটিয়া গ্রামে আদ্দীর বাড়ির দরজার জামে মসজিদের উত্তর পাশে অবস্থিত কালভার্টটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। পারাপারে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ঢালাই পড়ে যাওয়ায় রডের উপর সুপারি গাছ দিয়ে সাঁকোর মতো তৈরি করেছেন স্থানীয়রা। যার কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দেউলা ইউনিয়নের মজম বাজার হতে চরটিটিয়া গ্রামে যাওয়ার প্রধান সড়ক এটি। ওই সড়কের আদ্দীর বাড়ি নামক এলাকার জামে মসজিদের উত্তর পাশে খালের উপর র্নিমির্ত কালভার্টটির ঢালাই নেই আছে শুধু রড। যেখান দিয়ে প্রতিদিন স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং নানা শ্রেণি পেশার প্রায় ৪ হাজার লোক যাতায়াত করে। কালভার্ট পারাপারে প্রতিনিয়তই তারা মহা বিপদে পড়ছেন। বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী, বয়স্ক লোক এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ফজর আলীর ছেলে আবুল হোসেন (৭৩) জানান, প্রায় ২৮ বছর পূর্বে খালটির উপর কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়। এটি অনেক পুরোনো হয়ে যাওয়াতে গত ৭ বছর আগে থেকে এর ঢালাই ঝড়ে পড়া শুরু হয়। যার ফলে আজ এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
কুট্টি মিয়ার ছেলে আ: রশিদ বলেন, আমরা বুড়ো মানুষ হওয়াতে এখান দিয়ে পাড় হয়ে ঠিকমতো মসজিদে যেতে পারি না। এখান দিয়ে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে আমি কয়েক বার আহত হয়েছি।
তাছাড়া ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা, আ: মতলেবের ছেলে মোছলেম (৬৫), কয়ছর মিয়ার ছেলে নান্নু (৪৫), কালামের ছেলে ইয়াছিন (৫৩) , পার্শ্ববর্তী মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুলসহ আরও অনেকেই জানান, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কালভার্ট এ অবস্থার কারণে আমাদের ভোগান্তি চরমে।কোরবানির ঈদে একটি গরু এখান থেকে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে যায়। পরে উদ্ধার করে সেটি জবাই করা হয়। এখানে প্রতিনিয়তই কোনও না কোনও দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে।
তারা আরও জানান, এলাকার কেউ অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে অনেক বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। রাস্তা এবং কালভার্ট খারাপ থাকায় এখানে কোনও গাড়ি আসতে পারে না। রোগীকে কাধে করে নিতে হয়।
তবে সবচেয়ে ভোগান্তিতে আছেন এখানকার স্কুল, কলেজ এবং মাদরাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। লালমোহন শাহবাজপুর সরকারি কলেজে অধায়ণরত এইচএসসি ১ম বর্ষের ছাত্র সোহাগ জানান, প্রায় ১ মাস আগে এখানে পড়ে পায়ে প্রচণ্ড আঘাত পাই।
এছাড়া একই এলাকার ৭ম শ্রেণির ছাত্র লোকমানের ছেলে তানজিল, ৩য় শ্রেণিতে পড়া সবুজ ও স্বপ্না এবং ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র ফজলে রাব্বি বলেন, আমরা প্রতিদিন স্কুল-মাদরাসায় যাওয়ার সময় ও আসার সময় এখানে এসে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় থাকি। তাই সকালে বাড়ি থেকে আসার সময় আব্বা-আম্মা পাড় করে দেন।আবার ছুটির পর অন্যের সহায়তায় পাড় হয়ে থাকি।
ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান জানান, সত্যি এটি একটি মরণফাঁদ। কালর্ভাটি দু’টি গ্রামের মধ্যস্থলে হওয়া এটার দিকে তেমন খেয়াল নেয়া হয়নি।
দেউলা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবুল মুঠোফোনে বলেন, আমি কয়েকদিন যাবত খুব অসুস্থ। এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। কেউ আমাকে বলেনি।
Leave a Reply