মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি॥ মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেয়ায় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যান শোভা রানী মজুমদারকে (৫০) কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিরা দুই মাসেও গ্রেফতার হয়নি। এতে পুনরায় হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কায় তিনি পালিয়ে গ্রামের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
গত ২ জুলাই রাত ৯টার দিকে বসত ঘর থেকে রান্না ঘরে যাওয়ার উদ্যত হয়ে দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে শোভা রানী মজুমদারের গলার চেন ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনায় হাসপাতাল থেকে ৫ জুলাই ইসমাইল হাওলাদার (২২) ও তার পিতা রত্তন হাওলাদারসহ (৫০) অজ্ঞাত দুইজনের বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া থানায় মামলা করেন শোভা রানী।
শোভা রানী মজুমদার মঠবাড়িয়া আনসার ভিডিপির পৌরপ্রধান কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার ওপর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে ও আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে মঠবাড়িয়া, ভাণ্ডারিয়া, কাউখালী ও রাজধানী ঢাকাতেও মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রত্তন হাওলাদার সপরিবারে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া থানায় ৫টি মাদক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি মঠবাড়িয়া থানার এসআই শাহানাজ পারভীন ১ হাজার ৩০০ পিস ইয়াবাসহ পুরো পরিবারকে গ্রেফতার করেন। এর আগে পিরোজপুর ডিবি পুলিশের এসআই দেলোয়ার হোসেন জসিম ৪ দফা তাদের ইয়াবা, গাঁজা, চোরাই মাল ও নগদ টাকাসহ গ্রেফতার করেন।
এসআই দেলোয়ার জানান, বিভিন্ন সময় চোরাই মাল ও ১ কেজি গাঁজাসহ রত্তনের ছেলে কালামকে প্রথম গ্রেফতার করা হয়। দ্বিতীয় দফায় তাদের ১০ কেজি গাঁজা, ২০০ ইয়াবা, তৃতীয় দফায় ৫ পিস ইয়াবা ও নগদ ৩২ হাজার টাকা। শেষবার ৫০ পিস ইয়াবাসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী পরিবারটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে অবৈধভাবে বসবাস করে আসছে। মাদক পরিবার হিসেবে কয়েক বছর আগে এলাকাবাসী তাদের এলাকাচ্যুত করেন। অজ্ঞাত কারণ ও অদৃশ্য শক্তির ফলে আবারও তারা ওই জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে একধরনের ঢোল-ডাঙ্কা পিটিয়ে মাদক ব্যবসা করে আসছে।
শোভা রানী মজুমদার জানান, পুলিশ বারবার মাদক পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতার করে। আমার বাসা ওই মাদক পরিবারটির বাসাসংলগ্ন হওয়ায় আমি পুলিশকে সহযোগিতা করি- এ সন্দেহে তারা আমাকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। আমাকে মৃত ভেবে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
তিনি ক্ষোভের বলেন, আজ দুই মাস হলেও পুলিশ কোনো আসামি গ্রেফতার করতে পারেনি। এদের উপযুক্ত শাস্তি না হলে পরে আমাকে খুন করে ফেলবে। মঠবাড়িয়া থানার ওসি মাসুদুজ্জামান জানান, আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply