বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪১ অপরাহ্ন
এম. কে. রানা॥ বৈশ্বিক মহামারী করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে বরিশালে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নানাবিধ তৎপরতা শুরু করেছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরীসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলায় ধারাবাহিকভাবে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা এবং সচেতনতা কার্যক্রম চলছে। সাধারণ মানুষের সচেতনতার পাশাপাশি বেড়েছে মাস্কের ব্যবহার। ফলে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ী বাড়িয়ে দিয়েছে মাস্কসহ অন্যান্য উপকরণের দাম। পাশাপাশি নিম্নমানের রোগ প্রতিরোধকারী পণ্যের আমদানী বেড়েছে। তবে এ ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছে প্রশাসন।
গত বৃহস্পতিবার ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ প্রচারণা বাস্তবায়ন ও করোনা প্রতিরোধী স্বাস্থ্য বিধি পালনে জেলায় তিনটি ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ৬২ জন ব্যক্তিকে ১১ হাজার একশ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর আগের দিন জেলাজুড়ে ৮টি ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ৫২ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ২২ হাজার ৯শ’ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার জেলার ১২৫ ব্যক্তিকে মাস্ক না পরার অপরাধে ২৬ হাজার দুইশো পঞ্চাশ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমান আদালত।
এদিকে করোনার সংক্রমন ঠেকাতে প্রশাসনের ধারাবাহিক অভিযানের কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে বেড়েছে মাস্কের ব্যবহার। এতদিন ঢিলে-ঢালাভাবে মাস্কের ব্যবহার হলেও প্রশাসনের তৎপরতায় এখন অনেকেই ছুটছেন সুরক্ষা সামগ্রীসহ মাস্ক কিনতে। সরেজমিনে বরিশাল নগরীর গীর্জামহল্লা, হাসপাতাল রোড, শেবাচিম হাসপাতালের সামনের ফার্মেসি ও ফুটপাতগুলোতে অতিরিক্ত দামে মাস্ক সহ অন্যান্য করোনা প্রতিরোধী সুরক্ষা সামগ্রী বিক্রি করতে দেখা গেছে। একবার ব্যবহার করা যায় এমন মাস্ক প্রতিটি ১৫ থেকে ২০ টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। যা মাত্র দুদিন আগেও বিক্রি হতো ৫ টাকায়। এছাড়া এন নাইন্টি ফাইভ নাম দিয়ে বিক্রি করা মাস্কগুলো রাখা হচ্ছে ৯০ থেকে ১৫০ টাকা। যেগুলো কদিন আগে সর্বোচ্চ ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
অপরদিকে মানহীন হ্যান্ড স্যনিটাইজার ও জীবাণুনাশক বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে বাজারে। নামী-দামী কোম্পানীর বোতলের সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে তৈরিকৃত বোতলে এবং প্রায় কাছাকাছি নাম দিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে এগুলো। যেগুলোর মোড়কে কিংবা বোতলের গায়ে কারখানার নাম ঢাকা উল্লেখ করা হলেও মূলত সেগুলো তৈরি হয় স্থানীয় পর্যায়ে। হঠাৎ চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং যোগান কম থাকায় এ ধরণের অসাদু কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফার্মেসির মালিক জানান, হঠাৎ করেই মাস্ক কেনার ধুম পড়েছে। এ সুযোগে পাইকারী ব্যবসায়ীরা করোনা প্রতিরোধক সামগ্রীর পাশাপাশি সাধারণ ঠান্ডা কাশির ওষুধের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে অতিরিক্ত মূল্যে মাস্ক এবং মানহীন জীবাণুনাশক বিক্রি রোধে মাঠে নামবে প্রশাসন। এমনটাই নিশ্চয়তা দিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান। তিনি বলেন, ‘মহামারির পরিস্থিতির যারা ফায়দা লোটার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। যেসকল ব্যবসায়ী এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলেন তিনি।
Leave a Reply