সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন
তালতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনার তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা বাজারের খাল এবং মালিপাড়া স্লুইস গেট সংলগ্ন খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, শারিকখালী ইউনিয়নের কচুপাত্রা বাজারে প্রতি রবিবার হাট বসে এবং প্রধানমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও থেমে নেই খাল ও জলাশয় দখল।
কোথাও প্রভাবশালীরা, আবার কোথাও রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় সাধারণ মানুষ ও দোকান মালিকরা বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে। মালিপাড়া স্লুইস গেট সংলগ্ন খালের এক পাশ ছয় থেকে সাতজন লোক দখল করে আছে।
খালের দুই পাড়ে দোকান নির্মাণ করার ফলে এক দিকে যেমন খাল সংকুচিত হয়েছে অন্যদিকে খালের নাব্যতা কমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এক সময় খাল দিয়ে নৌকা চলত, মানুষ মালপত্র নিয়ে যাতায়াত করত। এখন তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে প্রশাসন খালটিকে গিলে খাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। বৃষ্টির দিন এলে চরম দুর্ভোগে বসবাস করে সাধারণ মানুষ। খালের দুই পাড় দখল করার কারণে ময়লা-আবর্জনা নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ময়লা আর্বজনা মালিপাড়া স্লুইস গেট সংলগ্ন খালে ফেলে।
সরকারি খালের পাড়ে তাদের ব্যক্তিগত জায়গা মনে করে ছোট ছোট ঘর তুলে। খালটি দখল করায় যেটুকু খাল আছে তাও ময়লায় ভরপুর। এই ময়লা পানি দিয়ে আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে হয়।
এ বিষয় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সংগঠক হাসান ঝন্টু বলেন, সরকারি খাল বা নদীর পাশে কোনো অবৈধ স্থাপনা করার সুযোগ নেই। কেউ যদি খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা করার চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের উচিত উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে দখল মুক্ত করা।
উপজেলা ভূমি অফিসে অবৈধ স্থাপনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সেখানে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক বলেন, কচুপাত্রা-দোন খাল এবং মালিপাড়া খালের পাড়ে যে হাড়ে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠছে এক সময় রাস্তার দুই পাশের খাল দুটি ভরাট হয়ে যেতে পারে। আমরা কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হব।
বন্ধ হয়ে যাবে আমাদের ফসল উৎপাদন। আমরা ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করি যার কারণে একসময় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে যাবে গোটা এলাকায়। বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে আনা হলেও এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের বরগুনা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুশফিক আরিফ বলেন, অবৈধ স্থাপনা ব্যক্তিগতভাবে কেউ দখলে নিতে পারবে না। খাল কিংবা জলাশয়ের জমি কেউ দখল করলে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। অবৈধ জমি দখলের কারণে একসময় পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কাওসার হোসেন মুঠোফোনে জানান, অবৈধ স্থাপনার লিস্ট তৈরি করে ডিসি অফিসে জানানো হয়েছে এবং ডিসি অফিস থেকে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেবে।
Leave a Reply