সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৭৬টি আয়রন ব্রিজ এখন মরণফাঁদে পরণিত হয়েছে।
এ সকল আয়রণ ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন। এসকল ব্রিজ ধ্বসে যেকোনো মুহুর্তে বড় ধরনের প্রাণহানির আশংঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
দু’উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, আমতলী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৬০টি ঝুঁকিপূর্ণ আয়রন ব্রিজের মধ্যে ১২টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এবং তালতলী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ১৬টি ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজের মধ্যে ৭টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ আয়রন ব্রিজ রয়েছে।
সরেজমিনে দু’উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি), জেলা পরিষদ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস (ত্রাণ বিভাগ) কর্তৃক নির্মিত একাধিক আয়রণ ব্রিজের স্লিপার ভেঙে ও অ্যাঙ্গেলে মরিচা ধরে নদীতে পড়ে রয়েছে।
আমতলী উপজেলার আমড়াগাছিয়া বাজার সংলগ্ন আয়রন ব্রিজ, আঠারোগাছিয়া ইউনিয়র পরিষদ সংলগ্ন আয়রন ব্রিজ, গুলিশাখালী কালামপুর মাদরাসা সংলগ্ন আয়রন ব্রিজ, তক্তাবুনিয়া রহিমিয়া মাদরাসা সংলগ্ন আয়রন ব্রিজ, মধ্য আড়পাঙ্গাশিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন আয়রন ব্রিজ, কুকুয়া কুতুবপুর মাদরাসা সংলগ্ন আয়রন ব্রিজ ও আরুয়া বৈরাগী আয়রন ব্রিজ এবং তালতলী উপজেলার শানুর বাজার সংলগ্ন আয়রন ব্রিজ, সোনা আয়রন ব্রিজ, শারিকখালী আয়রন ব্রিজ, ডাকুয়া বাড়ি সংলগ্ন আয়রন ব্রিজ, তাতীপাড়া সংলগ্ন আয়রণ ব্রিজ ও কালীর আয়রন ব্রিজসহ দু’উপজেলার অনেক সেতু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে। এ সকল সেতু দিয়ে প্রতিদিন দু’উপজেলার হাজার হাজার মানুষ, শিক্ষার্থী ও যানবাহন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন।
আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের টেপুড়া গ্রামের বাসিন্ধা ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. আবু সালেহ জানান, টেপুড়া বাজার ও পার্শ্ববর্তী গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগী এলাকার শিক্ষার্থী ও সর্বসাধারনের চলাচলের সুবিধার্থে গত ২০০১ সালে টেপুড়া নদীর ওপর একটি আয়রণ ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।
নির্মাণের পর থেকে অদ্যবদী এ ব্রিজটির কোনো সংস্কার না হওয়ায় সেতুটির স্লিপার ও অ্যাঙ্গেলে মরিচা ধরে ভেঙে নদীতে পড়ে রয়েছে। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ভাঙা ব্রিজ দিয়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ পারাপার হচ্ছেন। যেকোনো মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা।
তালতলী উপজেলার সানুর বাজার সংলগ্ন বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা শ্যামল দেবনাথ বলেন, আমাদের শানুর বাজার ও বেহালা গ্রামে পারাপারের জন্য নির্মিত আয়রন ব্রিজটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ভাঙা ব্রিজ পার হয়ে সাধারণ মানুষদের বাজারে আসতে ও যেতে হয়।
তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী আহম্দে আলী মুঠোফোনে বলেন, এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ১৬টি ঝুঁকিপূর্ণ আয়রন ব্রিজ রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব ব্রিজ পুননির্মাণ করা হবে।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ আয়রন ব্রিজের তালিকা প্রস্তুত করে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply