মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৮ অপরাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ বরগুনার বেতাগীতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা বরাদ্দ ২ হাজার ৫০০ টাকার তালিকা পুনঃযাচাইয়ের ক্ষেত্রে মোবাইলের সিম বিক্রিকে কেন্দ্র করে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মোবাইল সিম কোম্পানির বিক্রেতাদের সাথে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও ইউপি সদস্যদের চুক্তিতে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে এ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিম বিক্রির জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ১০০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে দিয়ে থাকলেও তা কোন কাজে আসছে না। অপরদিকে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই শত শত লোকের সমাগমে মোবাইল সিমের রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে।
বেতাগী উপজেলায় হতদরিদ্রের তালিকায় ৭ হাজার ২০০ জন তালিকাভূক্ত করা হয়। এর মধ্যে বিবিচিনি ইউনিয়নে ১ হাজার ৩ জন, বেতাগী সদর ইউনিয়নে ৯১৬, হোসনাবাদ ইউনিয়নে ৯৮৮, মোকামিয়ায় ৮৩৩, বুড়ামজুমদার ইউনিয়নে ৮৮৫, কাজিরাবাদ ইউনিয়নে ৮০৮, সড়িষামুড়ি ইউনিয়নে ৯২৮ জন এবং পৌরসভায় ৮৮০ জন তালিকাভুক্ত করা হয়।
নতুন করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে তালিকাভুক্ত ৭ হাজার ২০০ জনের মধ্যে ৪ হাজার ৭৬৫ জনের তালিকা পুনঃযাচাই করে দেয়ার নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। এরই ভিত্তিতে নতুন করে মোবাইল সিমে ব্যাক্তির নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে।
উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের এ সহায়তা বরাদ্দে ৯৮৮ জন অসহায় লোকের নাম তালিকাভূক্ত করা হলেও এর মধ্যে ৬২৫ জনের নাম আসেনি। তাদের নামের সাথে মোবাইল নম্বরের রেজিস্ট্রেশন ঠিক ছিলো না, যার ফলে তাদের এনআইডি কার্ড দিয়ে পূনরায় রেজিস্ট্রেশন করে সিম ক্রয়ের কথা বলা হয়েছে। তবে একাধিক ইউপি সদস্য তাদের সিম ক্রয়ের জন্য ১৫০ টাকাসহ অন্যান্য খরচ দেখিয়ে আরো ৫০ থেকে ১০০ টাকাসহ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা জনপ্রতি করে অতিরিক্ত উত্তোলন করছেন।
এ অবস্থায় অসহায় শতাধিক লোক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, তালিকায় নাম দেয়ার সময় টাকা দিয়েছি, আবার রেজিস্ট্রেশন করার টাকা দিয়েছি, টাকা পাবো ২৫ শ’ কবে পাবো তাও জানি না।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শৈলান চন্দ্র বলেন, আমরা ইউনিয়ন পরিষদে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং ১ শ’ ৫০ টাকা করে নিবো তবে ইউপি সদস্যরা বেশি নিয়েছে কিনা তা জানা নাই। তবে আমি শুনেছি।
এ ব্যাপারে হোসনাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মো: খলিলুর রহমান খান মুঠো ফোনে বলেন, সচিব ও কোন ইউপি সদস্য অতিরিক্ত টাকা নিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এছাড়াও নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেন জনপ্রতি আরো পঞ্চাশ টাকা বেশি উত্তোলন করেছেন। ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি তাদের কাছ থেকে ভাড়ার টাকা নিয়েছি।
সংশ্লিষ্ট এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, বাজারের দোকান থেকে সিম ক্রয় করলে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা লাগে কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও সদস্যরা কিছু কোম্পানীর লোক এনে তাদের সাথে চুক্তি করে এ ধরণের অর্থ বাণিজ্য করছেন।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রাজীব আহসান বলেন, মোবাইল সিমের দামের ব্যাপারে ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে টাকা বেশি নেয়ার ব্যাপারে আমি অভিযোগ পেয়েছি এবং সচিবকে অতিরিক্ত টাকা ফেরৎ দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারপরও সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply