সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৭ অপরাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি॥ বিদ্যালয়ে নেই কোনো ছাত্র-ছাত্রী, নেই খেলার মাঠ, বেঞ্চ-টেবিল এমনকি নেই লাইব্রেরি অফিসও।
নাম মাত্র একটি টিনশেড ঘর দেখিয়ে সরকারি বেতন-বাতাসহ সব সুযোগ সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছেন বিদ্যায়লটির চার শিক্ষক। এভাবেই চলছে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব পশারীবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এছাড়া জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে স্কুলটিতে শিক্ষকদের নিয়োগ হয়েছে বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতির।
জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার পশারীবুনিয়া গ্রামে ১৯৯৫ সালে ১৬৪ নং দক্ষিণ-পূর্ব পশারীবুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে প্রথমে খলিলুর রহমান হাওলাদার বাড়ির সামনে প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হয়।
গ্রামবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, বিদ্যালয়টির নামে নিজস্ব জমি বরাদ্দ না থাকার কারণে মৌখিকভাবে স্কুলটি স্থানান্তর করা হয় স্থানীয় আব্দুস সালাম হাওলাদারের বাড়ির পাশের ৪ কাঠা জায়গায়। সেখানেই চলছিল অল্প কিছু ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে পাঠদান ।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম ও সদস্যরা জানান, ২০০৭ সালে সিডরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিদ্যালয়টি। প্রায় বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষা কার্যক্রম। পরে ২০১৪ সালে বিদ্যালয়টিকে সরকারিকরণ করা হলে একটি স্বার্থান্বেসী মহলের যোগসাজশে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে স্কুলের কর্মকর্তাদের না জানিয়ে বিদ্যালয়ে নিয়োগ পান চার শিক্ষক। ভুয়া নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। পরে পরিত্যক্ত বিদ্যায়ল ভবন থেকে সরে পাশের একটি জায়গায় নতুন করে একই নামে গড়ে তোলা হয় আরেকটি বিদ্যালয়। অবশেষে নিজের দাবিতে বিষয়টি গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। এ বিষয়ে ২টি মামলায়ও করেন বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটি।
এদিকে ভুয়া নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নতুন তৈরিকৃত টিনশেড বিদ্যালয়ের ৬টি শ্রেণিতে কাগজে-কলমে ৩৬ জন ছাত্র-ছাত্রী থাকার দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে বাস্তবে নেই ৫ জনও শিক্ষার্থী দাবি গ্রামবাসীর।
শুধু শিক্ষার্থীই নয়, এ বিদ্যালয়ে নেই খেলার মাঠ ,বেঞ্চ-টেবিল বা লাইব্রেরি অফিস। তবুও প্রায় ২ বছর ধরে ক্লাস না করিয়ে নাম মাত্র একটি টিনশেড ঘর দেখিয়ে সরকারি বেতন-বাতাসহ সব সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন বিদ্যায়লটির তিন সহকারী শিক্ষকসহ প্রধান শিক্ষক।
এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে পাওয়া না গেলেও পরে স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকা সীমা রানীর বাড়িতে গিয়েও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পরও তাকে পাওয়া য়ায়নি।
এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে স্কুলটি সরকারিকরণ ও শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলো এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. নাসির উদ্দীন খলিফার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান মিডিয়ায় ক্যামেরায় সাক্ষাৎকার দিতে উপর মহল থেকে নিষেধাজ্ঞা আছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জেছের একই সুরে কথা বললেও পরে ফোন কলে বক্তব্য দিতে রাজি হন তিনি। পরে তিনি জানান লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply