রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৯ অপরাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি॥ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার একাধিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে সাংস্কৃতিক চর্চা কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব বাজেটের ‘সাংস্কৃতিক চর্চা’ খাত থেকে ব্যয়িত অর্থ তসরুপ করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
উপজেলার সরকারি হাতেম আলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, কে এম লতীফ ইন্সটিটিউশন, উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ একাধিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে সংস্কৃতি চর্চার আওতায় আনা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে সংস্কৃতি চর্চার জন্য একজন প্রশিক্ষক (হারমোনিয়াম) ও তবলায় প্রশিক্ষণ দান এবং সংগীতের সংগত দানে সক্ষম একজন তবলাচির নিয়োজিত করা হয়েছে। উক্ত প্রশিক্ষক ও তবলাচির সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রদত্ত সম্মানী বিদ্যালয় হতে প্রাপ্য হবেন।
প্রশিক্ষকদের সম্মানী নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। কোনো কোনো বিদ্যালয় থেকে সংস্কৃতি চর্চার জন্য ২ জন এমপিওভুক্ত শিক্ষককে নিয়োজিত করা হয়েছে। আবার কোন কোন বিদ্যালয়ে একজন এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও বাহির থেকে একজন নিয়োজিত করা হয়েছে। অথচ নিয়ম হলো স্কুলের এমপিওভুক্ত কোন শিক্ষক প্রশিক্ষক সেজে ভাতা ভোগ করতে পারবে না।
প্রকৃত প্রশিক্ষনকারীরা সম্মানী না পাওয়ার অভিযোগে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, উপজেলা প্রশাসন ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করে উপজেলার সংস্কৃতি চর্চার আওতায় আনা বিদ্যালয়গুলোর মোট সংখ্যা চাওয়া হলেও কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। এ সংক্রান্তে প্রশিক্ষক ও তবলাচিরের নামসহ বিদ্যালয়গুলোর তালিকা পেতে আবেদন করা হয়েছে।
রবিবার (২৯ আগস্ট) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একজন গণমাধ্যমকর্মী তথ্য অধিকারে আবেদনটি করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।
সংস্কৃতি চর্চার প্রশিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ে কর্মরত কোন শিক্ষককে নিয়োজিত করা যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (অনুষ্ঠান) অসীম কুমার দে জানান, সংস্কৃতি চর্চার প্রশিক্ষক ও তবলাচির হিসেবে বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক নিয়োজিত হতে পারবেন না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অঃ দাঃ) ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ইদ্রিস আলী আজিজী জানান, বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষককে সংস্কৃতি চর্চার প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত করা এমপিও নীতিমালার সাথে সাংঘর্ষিক। একজন শিক্ষক ২ টি রাজস্ব খাতের টাকা ভোগ করতে পারেন না।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনের লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সংস্কৃতি মনস্ক করে গড়ে তুলতে সরকার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সংস্কৃতি চর্চা কার্যক্রম পরিচালনা নীতিমালা -২০২০ গ্রহণ করেছে।
পরিপত্রে উল্লেখ রয়েছে, একজন প্রশিক্ষক ও একজন তবলা সঙ্গতকারী সর্বোচ্চ ৩টি বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তিনি ৩টি বিদ্যালয় হতে পৃথকভাবে সম্মানী প্রাপ্য হবেন।
স্থানীয় গৌতম শীল জানান, আমি বিভিন্ন স্কুলে গান শিখাই। তবে সরকারি সম্মানী পাই না। উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও আমি ছাত্র – ছাত্রীদের গান শিখাই। শুনেছি সরকার সম্মানী দেয়। আমিতো কোন সম্মানী পাই না। ওই স্কুলের শিক্ষকরাই সংস্কৃতি চর্চার সম্মানী ভোগ করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সরকারি হাতেম আলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, কে এম লতীফ ইন্সটিটিউশন, গুলিশাখালী জি কে ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ছগির মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বড় মাছুয়া হাই ইন্সটিটিউশনসহ একাধিক বিদ্যালয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা দু’টি পৃথক রাজস্ব খাতের টাকা ভোগ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে এমনটা হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
Leave a Reply