নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সেই বহিস্কৃত নেতা নাজমুল হুদা এর বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের পর থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে দপদপিয়া সেতুতে মালামাল লোড অনলোডে এই নাজমুলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তার শেল্টারে ২৪ নং ওয়ার্ডে মাদক ব্যবসায়েরও অভিযোগ উঠেছে।

এরবাইরে সম্পা নামের এক মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে যৌন হয়রানি করে আসছে। ওই মেয়ের বিয়ে হওয়ার পরও তাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানী করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। হয়রানির শিকার ওই মেয়ের বাড়ির সামনে থেকে নাজমুলের মোটরসাইকেল চুরি হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন তার গাড়ি চুরি কোথা থেকে হয়েছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি সুকৌশলে এড়িয়ে যান।

কারণ যৌন হয়রানি করতে গিয়ে নাজমুলের মোটরসাইকেল খোয়া গেছে। এরফলে তিনি এ বিষয়ে আর মুখ খুলেন নি। এদিকে সাংসদ নির্বাচনে মাইকিংয়ের জন্য দৈনিক ৫’শ করে টাকার নেয়ার দায়িত্ব পান নাজমুল। মাইকিং করতো ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিলন।

তাকে ৫’শ টাকার পরিবর্তে দিতো ৩’শ টাকা। দৈনিক মাইকিংয়ের টাকা নিয়ে বাকবিত-ার একপর্যায়ে যুবলীগ নেতা মিলন এর ওপর চরাউ হয় নাজমুল। বেধম মারধর করা হয় মিলনকে। পুন:রায় মারধর করতে গেলে নাজমুল স্টিলের আলমারীর সাথে ধাক্কা লেগে তার নিজের হাত ভেঙ্গে যায়।

এরপর মিলনকে হত্যার হুমকি দেয় নাজমুল। প্রাণের ভয়ে মিলন বর্তমানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা এসব বিষয়ে নিরবে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও মুখ খুলতে পারছে না। কারণ হিসেবে জানা গেছে- এই নাজমুল মেয়রের নাম ভাঙ্গিয়ে যতসব অন্যায় অপকর্ম করে পাড় পেয়ে যাচ্ছে। নাজমুলের এহেন কর্মকা-ে ক্ষুদ্ধ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

তারা নাজমুলের বিষয়ে দলের সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়াসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন। প্রসঙ্গত, বরিশাল নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সাগরদী চেয়ারম্যান মরহুম সালাম মিয়ার পুত্র ওয়াহিদুল আনাম তানু ও তার দুই চাচা আমেরিকান প্রবাসী সফিক আকবর ও শহিদকে হত্যার হুমকি দিয়েছে নাজমুল হুদা, নজরুল ইসলাম ও আ: মান্নান নামের সংঘবদ্ধ চক্র।

এ বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- গত ২৯ ডিসেম্বর (২০১৮) সন্ধ্যায় সাগরদী রোডের সাবেক জনতা স্বমিলের সামনে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে বাকবিত-ার একপর্যায়ে নাজমুল হুদা, নজরুল ইসলাম, আ: মান্নান উত্তেজিত হয়ে শহিদ খানকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এমনকি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।

ওই সময় উপস্থিত লোকজন এগিয়ে আসলে তারা হত্যার হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ- সাবেক কাউন্সিলর আইয়ুব খান হুমকিদাতা নাজমুলের পক্ষে কাজ করছে। সূত্র আরো জানায়- এরআগে গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারী নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগে আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছিলো।

একই বছরের ৩ মে বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার হয়। বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের পর থেকে ফের নাজমুল হুদা ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এলাকার শান্তিপ্রিয় নারী পুরুষ এই নাজমুল হুদা নানা ধরণের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। নাজমুল হুদা চক্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকার শান্তিপ্রিয় নারী পুরুষ।

এদিকে এ ঘটনায় বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করা হয়েছে। ওয়াহিদুল আনাম তানু বাদী হয়ে ডায়েরি এই ডায়ের করেন, যার তারিখ..২৯-১২-২০১৮। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ সাগরদী চেয়ারম্যান মরহুম সালাম মিয়ার পুত্র ওয়াহিদুল আনাম তানুর চাচা সফিক আকবর ও চালি আকবর ওরফে শহিদ আমেরিকান প্রবাসী।