মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ অপরাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি॥ দ্বীপ জেলা ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় চলতি মৌসুমে গোল আলুর ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছর উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের চাষযোগ্য জমিতে এখন দেখা যাচ্ছে শুধু সবুজ আলুগাছের নিকানো প্রান্তর।
আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে থাকার কারণে আলু গাছ ভালো অবস্থায় রয়েছে। তবে আর ২০ থেকে ২৫ দিন আবহাওয়া এ রকম অনুকূলে থাকলে চরফ্যাশন উপজেলায় গোল আলুর ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
চরফ্যাশন উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ঠাকুর কৃষ্ণ দাস ভয়েস অব বরিশালকে বলেন, চরফ্যাশন উপজেলায় গত বছর প্রায় ২ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে, সে অনুযায়ী এ বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ২৫ হেক্টর, তবে চাষ হয়েছে ২ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে।
তিনি আরও বলেন, গত মৌসুমে অতি বৃষ্টির কারণে আলু চাষে কিছুটা লোকসান হওয়ায় এ বছর ৫ হেক্টর কম জমিতে আলু চাষ করেছেন কৃষকরা। তবে এখন থেকে ঘন কুয়াশা ও বৃষ্টিপাত কম হলে আশানুরূপ ফলন এবং কৃষকরা লাভবান হবে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আলু ক্ষেত ঘুরে দেখে মনে হয়, সবুজ আলু গাছের নিকানো প্রান্তরগুলো যেন কৃষকের হাসির রং ছড়াচ্ছে। কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, মৌসুমের শুরুতে যখনই আলুর বীজ লাগানো শুরু হয়। তখনই আকস্মিকভাবে নেমে আসে বৃষ্টি। এতে আলুর বীজ কিছুটা পচন দেখা দিলেও সময়োপযোগী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও কৃষকদের হার না মানা পরিশ্রমে বীজের তেমন একটা ক্ষতি হয়নি। তবে প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে কিছু আলু ক্ষেতের বীজ ৬০ ভাগ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকদের পুনরায় বীজ রোপণ করতে হয়েছে। আবার কেউ কেউ আলুর পরিবর্তে সেখানে মরিচের চাষ করেছেন। তবে বর্তমান মৌসুমে আলুর বাজার দর নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
চরফ্যাশন উপজেলার ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের হাসানগঞ্জ গ্রামের কৃষক আবু তাহের ও নছির হোসেন বলেন, সার-কীটনাশক ও বীজের খরচসহ গন্ডা প্রতি প্রায় ৩ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। আবার এ বছর শুরুতে বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে বেশকিছু জায়গায় আলুর বীজ পচে যাওয়ায় সেখানে পুনরায় বীজ রোপণ করতে হয়েছে। ফলন ভালো হলেও এতে করে বাজার দর কম হলে লোকসান গুণতে হবে বলে জানান তারা।
নীলকমল ইউনিয়নের চরযমুনা গ্রামের কৃষক শাহে আলম মিঝি বলেন, আমি এ বছর ২ একর জমিতে আলুর বীজ চাষ করেছি। এ পর্যন্ত আলু গাছের গঠন দেখে মনে হচ্ছে বাকি দিনগুলোতে যদি আবহাওয়া ভালো থাকে আশানুরূপ ফলন পাব।
আহাম্মদপুর ইউনিয়নের ফরিদাবাদ গ্রামের আলু চাষি মো. হোসেন মিয়া বলেন, আমি এ বছর ১ একর জমিতে আলু চাষ করেছি। আকাশ ভালো থাকলে ও ছত্রাক আক্রমণ না করলে এ বছর আলুর ভালো ফলন পাব বলে আশা করছি।
চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু হাসনাইন বলেন, চরফ্যাশন উপজেলায় এ বছর আবহাওয়াজনিত কারণে আলুর তেমন একটা ক্ষতি হয়নি। প্রথম দিকে বৃষ্টির কারণে সমস্যা দেখা দিলেও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সময়োপযোগী পরামর্শ দিয়ে সমাধান করেছি।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও আগামী দিনেও যদি ঘন কুয়াশা না থাকে, আকাশ রৌদ্রজ্জ্বল থাকে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো প্রকার ক্ষতি না হয়, তাহলে চরফ্যাশন উপজেলায় আলুর ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
Leave a Reply