জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে টাইগার চিংড়ি Latest Update News of Bangladesh

রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে টাইগার চিংড়ি

জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে টাইগার চিংড়ি

টাইগার চিংড়ি
টাইগার চিংড়ি




বরগুনা প্রতিনিধি॥ নতুন প্রজাতির চিংড়ি, বাঘের গায়ের চামড়ার মতো ডোরাকাটা তাই নাম টাইগার চিংড়ি। বরগুনার পাথরঘাটা, তালতলী ও পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় উপজেলা থেকে রফতানিকারকদের মাধ্যমে টাইগার চিংড়ি তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, দুবাই, চীন, জাপান, ইতালি, জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। পাশাপাশি এখন স্থানীয় বাজারেও ব্যাপকভাবে বাড়ছে এ চিংড়ির চাহিদা।

 

 

তাজমহল নামে বরগুনার একটি চাইনিজ রেস্তোরাঁর মালিক রিজন তালুকদার জানান, গত কয়েক বছরে উপকূলীয় মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নতুন এই প্রজাতির চিংড়িটি। দামে তুলনামূলক দারুন সস্তা। বাগদা, চামু, মটকা বা অন্যান্য পরিচিত ছোট চিংড়ির দামের চারভাগের একভাগ মাত্র। এ চিংড়ির স্যুপ খুবই সুস্বাদু। অনেক আগে থেকেই বিদেশে রফতানি হওয়া টাইগার ইদানিং সাধারণ মানুষের কাছেও ব্যাপক চাহিদার হয়ে উঠেছে।

 

 

জেলে ও বিক্রেতারা জানান, দেখতে অবিকল ছোট সাইজের বাগদা চিংড়ির মতো, আসলে কিন্তু বাগদা চিংড়ি নয়। বাঘের গায়ের চামড়ার মতো ডোরাকাটা। অনেকটা খয়েরি-লালচে রঙের। তাই বলা হয় টাইগার চিংড়ি। জেলেরা লাল চিংড়িও বলে থাকেন।

 

 

মহিপুর আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি ফজলু গাজী জানান, স্থানীয় বাজারে এই টাইগার চিংড়ির বড় সাইজ গড়ে বিক্রি হয় দেড়শ থেকে দুশো টাকায়; যেখানে সাধারণ কুঁচো (ছোট) চিংড়ির দর সাড়ে চারশ থেকে ছয়শ টাকা পর্যন্ত। তাই ক্রেতাদের প্রতিদিনের বাজার তালিকায় থাকছে টাইগার চিংড়ি।

 

 

মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা জগদিশ বসু জানান, সাগর কিংবা নদীতে পানি যখন লোনা থাকে, তখন এই চিংড়ির জন্ম হয়। আবার পানি মিঠা হলেই কমে যায়। জেলেদের মতে মাছগুলো মরে যায়। অনেক জেলেরা আবার বলেছেন, মিঠা পানিতে গভীর সাগরে চলে যায়।

 

 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম জানান, এই চিংড়ির ইংরেজি নাম টাইগার, বৈজ্ঞানিক নাম পেনাস মনোডন। প্রাপ্তবয়ষ্ক একটি চিংড়ির সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৩৩ সেন্টিমিটার হতে পারে। এই চিংড়ি উপকূলীয় ও মোহনা সংলগ্ন এলাকায় বেশি পাওয়া যায়। এরা বেশির ভাগ সময় ২০-৫০ মিটার পানির গভীরতায় চলাচল করে। এই চিংড়ি সামুদ্রিক হওয়ায় এটি পুষ্টিকর।

 

 

জেলেরা জানান, প্রধানত পৌষ থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত সাগর কিংবা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে শত শত জেলে টাইগার চিংড়ি আহরণ করে। টাইগার চিংড়ি আহরণের জাল অন্য জালের চেয়ে ভিন্ন। জালগুলো পাশে ১২ হাত, লম্বায় দুই হাজার হাত বা তার বেশিও হয়ে থাকে। জালের পাশাপাশি টাইগার চিংড়ি শিকারে প্রয়োজন হয় গ্রাফি (এ্যাংকর), দঁড়ি (রশি) এবং ইঞ্জিনচালিত নৌকা। এ জালে চিংড়ি ছাড়া অন্য কোনো মাছ আটকায় না। জালগুলো সাগর কিংবা নদীর মাটির খুব কাছাকাছি ফেলা হয়। অমাবস্যা ও পূর্ণিমার সময় সাগর ও নদীতে স্রোত বেশি থাকে, চিংড়িগুলো বেশি ধরা পড়ে।

 

 

বরগুনা ও পটুয়াখালী উপকূল অঞ্চলের অন্তত ১২ হাজার জেলে পরিবারের চার থেকে পাঁচ মাসের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে টাইগারকে ঘিরে। স্থানীয়ভাবে সাগর কিংবা মোহনা এলাকায় নির্দিষ্ট জাল পেতে জেলেরা টাইগার চিংড়ি আহরণ করে। আড়তে বিক্রির পরে চিংড়ির মাথা আলাদা করা হয় দেহ থেকে। এ কাজে শ্রম দিচ্ছে জেলে পরিবারের দরিদ্র মহিলা, শিশু ও জেলে শ্রমিকরা। মৌসুমের প্রায় চার মাস প্রতি সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন এসব মানুষের কাজ জোটে টাইগার চিংড়িকে কেন্দ্র করে। কয়েকশ শ্রমিক পায় চিংড়ির মাথা ছাড়ানোর কাজ। এরসঙ্গে জড়িতরা এ কাজকে বলেন চিংড়ির মাথা ভাঙার কাজ। জেলে, আড়ত মালিক ও শ্রমিকের বাণিজ্যিক ভাষ্য, চিংড়ি ’হেডলেস’ করার কাজ। স্থানীয় আড়তদার, ব্যবসায়ীরা জানান, টাইগার চিংড়ি বিদেশে রফতানি হয়।

 

 

পটুয়াখালীর নেভাল সি ফুডস লিমিটেডের মালিক গাজী দেলোয়ার হোসেন জানান, বরগুনার পাথরঘাটা, তালতলী ও পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় উপজেলা থেকে প্রতি বছর কমপক্ষে ১৫ কোটি টাকার টাইগার বিক্রি হয়, চালান দেয়া হয় খুলনা, চট্টগ্রাম, যশোরসহ বিভিন্ন মোকামে। সেই মোকাম থেকে টাইগার চিংড়ি চলে যায় খুলনা, চট্টগ্রাম, যশোর ও পটুয়াখালীর রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান কিংবা কারখানায়। সেখান থেকে যথাযথ মান বজায় রেখে প্যাকেটজাত করে মংলা বন্দর থেকে নৌপথে বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। এখন স্থানীয় বাজারেও ব্যাপকভাবে বাড়ছে এ চিংড়ির চাহিদা।

 

 

বরগুনা জেলা মৎস্য বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম জানান, টাইগার বাছাই কাজের সুবিধার জন্য ভিন্ন-ভিন্ন স্থান ও শেড করা জরুরি। টাইগার চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে আরো পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

খবর- বাসস

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD