মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় বরগুনায় সাধারণ মানুষকে নিরাপদে রাখতে ৬১০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতাসহ ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনার জন্য একটি যুদ্ধজাহাজ ও একটি ল্যান্ডিং ক্রাফট মোতায়েন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুরে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বরগুনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর কর্মকর্তা কমান্ডার ইমরান।তিনি বলেন, ‘‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমরা বরগুনাবাসীর পাশে ছিলাম। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এর সময়ও আমরা বরগুনাবাসীর পাশে থাকব। ইতোমধ্যেই উদ্ধার তৎপরতাসহ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের জন্য উপকূলে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে।
‘এছাড়াও একটি ল্যান্ডিং ক্রাফট (সামরিক উভচর বাহন) মোতায়ন করা হয়েছে। ল্যান্ডিং ক্রাফটি ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে উদ্ধার অভিযানসহ ত্রাণ তৎপরতায় ব্যবহার করা হবে। জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবেলায় ইতোমধ্যে বরগুনায় ছয়টি উপজেলায় ২৫ লাখ টাকা ও ২০০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলায় মোট ৬১০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় তিন লাখ স্থানীয় অধিবাসীসহ ২০ হাজার গবাদি পশু আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়াও আশ্রয়কেন্দ্রের আওতায় থাকবে বরগুনার সব ভবনসমূহ। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সামাজিক দূরত্ব মানতে আশ্রয়প্রার্থীদের বাধ্য করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘জেলায় কৃষকের উৎপাদিত বোরো ধানের মধ্যে ৮০ ভাগ ধান ইতোমধ্যেই ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছ। এছাড়াও শতভাগ তরমুজ, মুগডাল এরং সূর্যমুখী কৃষকরা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। আমাদের এখানে ভুট্টার ব্যাপক ফলন হয়েছে। কিন্তু পরিপক্ক না হওয়ায় মাত্র ৫০ ভাগ ভুট্টা আমরা ঘরে তুলতে পেরেছি। এছাড়াও বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে জেলাজুড়ে। কিন্তু পরিপক্ক না হওয়ায় বাদাম ঘরে তোলা সম্ভব হয়নি।
বেড়িবাঁধের নাজুক অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, ‘বরগুনা জেলায় প্রায় ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ইতোমধ্যেই আমরা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার করার জন্য চারটি টিম গঠন করেছি। এই টিম চারটি দ্রুত বেড়িবাঁধ মেরামত কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়াও সমুদ্রের অবস্থানরত সকল মাছ ধরার ট্রলার ইতোমধ্যেই আমরা নিরাপদ আশ্রয় নিতে সক্ষম হয়েছি। কিছু কিছু ট্রলার এখনো বাইরে আছে। সেগুলো নিরাপদ স্থানের দিকে যাচ্ছে।
বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছি। আমাদের শুধু একটাই অনুরোধ, সাধারণ মানুষ যেন আমাদের কথা রাখেন। আমাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা যেন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। তারা যদি স্বেচ্ছায় নিরাপদ আশ্রয় না যান, তাহলে আমরা বল প্রয়োগ করতে বাধ্য হব। তিনি আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাসের এই মহামারীর মধ্যে এরকম একটি ঘূর্ণিঝড় আমাদের চরম বিপাকে ফেলে দিয়েছে। তারপরও আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। তাছাড়া সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত মজুদও রয়েছে।’
Leave a Reply