সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন
এম.এস.আই লিমনঃসীমাহীন অনিয়ম, দূর্ণীতির আতুর ঘর রুপান্তরিত করার কারিগর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃআব্দুল হালিম আল মাদানী। গুটি কয়েক শিক্ষকের যোগসাজশেই একের পর এক অনিয়ম আর দূর্ণীতি করে রাম রাজত্ব কায়েম করে ফুলে ফেঁপে উঠেছে তারা।আর এর সকল দায়ভার চাপাচ্ছেন তথাকথিত গভর্নিং বডির সদস্যদের ঘাড়ে। নিয়মঅনুযায়ী মাদ্রাসার আভ্যন্তরীণ উত্তলিত সকল টাকা ব্যাংক হিসাব নং ৩০৩ এ জমা হবার পরে প্রয়োজন মাফিক অধ্যক্ষ এবং সভাপতি’র যৌথ স্বাক্ষরে উঠিয়ে অর্থ কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে ব্যয় করার বিধান থাকলেও কেউ তা আমলে নিচ্ছে না।
প্রতি শ্রেণীর, শ্রেণী শিক্ষকরা মাসিক বেতনের টাকা, সেশন চার্জ,খেলা ধুলা’র নামে উত্তোলিত অর্থ,মিলাদের নামে উত্তোলিত অর্থ,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে উত্তোলিত অর্থ,রোভার স্কাউটিং এর টাকা বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানের নামে উত্তোলিত অর্থ,আভ্যন্তরীন শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের নামে উত্তোলিত টাকা/এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণীর পরিক্ষার ফি ও ফরম পুরন বাবদ উত্তোলিত লক্ষ লক্ষ টাকা, সেই সাথে সার্টিফিকেট, উপ-বৃত্তির অর্থ।
বিশেষ করে উপ-বৃত্তির টাকা শিক্ষার্থী দের প্রাপ্য সে সব টাকা তাদেরকে না দিয়ে কতিপয় অসাধু শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ’র যোগসাজশে নিজেদের পকেটস্থ করে রাখে মাসের পর মাস।এমনকি আর্থিক বছর অতিক্রান্ত হবার পরেও অনেকে টাকাগুলো মাদ্রাসার ব্যাংক হিসাব নং এ জমা করে না।
এ নিয়ে বহুবার উপাদক্ষ আলোচনা সভায় তাহাদা প্রদান করা হলেও তা কর্ণপাত করেনি। অনুসন্ধান সূত্রে জানা গেছে, উপদাক্ষ ও তার খয়েরখা এবং সকল অপকর্মের সহযোগী সহকারী শিক্ষক এনামুল হক এর নিকটেও অদ্যাবদি লক্ষাধিক টাকা কয়েক মাস যাবৎ তাদের ব্যক্তিগত এ্যাকাউন্টে রয়েছে। যা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত করলে সব থলের বিড়াল বেরিয় আসবে।
ইতোপূর্বেও মিষ্টার এনামুল হক সহ কতিপয় শিক্ষক মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে সরকার নিশিদ্ধ অবৈধ গাইড বই চালিয়ে দেবার কথা বলে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলো। পরবর্তীতে অভিবাবক ও অন্যান্য শিক্ষকদের চাপের মূখে পরে সে টাকা ফেরত দিতেও বাদ্ধ হয়েছিল।
মাদ্রাসার জমিজমা সংক্রান্ত মামলা পরিচালনা বার্ষিক লক্ষ লক্ষ টাকার আয় ব্যয়ের হিসাব নামকাওয়াস্তে ভূয়া ভাউচার তৈরী করে বার্ষিক আয় ব্যায়ের হিসাবের গড়মিল মিলাতে পটু এ শিক্ষক। আর তাকে প্রতক্ষ ও পরক্ষ ভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহ দূর্ণীতিগ্রস্থ কতিপয় শিক্ষকরা।
মাদ্রাসায় প্রভাষক থেকে শুরু করে সহযোগী অধ্যাপক পদ মর্যাদার উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষকরা থাকা সত্ত্বেও কোন এক অজ্ঞাত কারনে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এনামুল কেই ব্যক্তিগত বুদ্ধি দাতা হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে।শিক্ষা উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকার ভকেশনাল প্রতিষ্ঠান তৈরী করে লাখ লাখ টাকার কম্পিউটার সরঞ্জামাদি মাদ্রাসাতে সরবরাহ করে দ্বীতল ভবন নির্মান করে দিলেও ঐসব পন্য সামগ্রী বর্তমানে অযত্নে অহেলায় টয়লেট বাথরুমে বছরের পর বছরজুড়ে পরে থাকায় ময়লার ভাগারে পরিনত হয়েছে।
অথচ এগুলো রক্ষনাবেক্ষন ও বিদ্যুৎ বিল বাবদ বেশ কয়েক বছর যাবৎ লাখ লাখ টাকার অপচয় হয়েছে।
সরকারি ভাবে বরিশালে মাদ্রাসাগুলোকে পর্যবেক্ষনের দায়িত্বে কোন সুনির্দিষ্ট দপ্তর না থাকার কারনে এ সুযোগকে একশ ভাগ কাজে লাগিয়ে বিশেষ করে সাগরদী ইসলামীয়া কামিল মাদরাসায় লুটপাটের রাম রাজত্ব কায়েম করে চলেছে। ইতিপূর্বে কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পর্যবেক্ষন দল ফাজেল, কামিল পরিক্ষার সময়ে বস্তায় বস্তায় নকল উদ্ধার করে কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যায়।সে সময় এ সংক্রান্ত বিষয় সচিত্র প্রতিবেন স্থানীয়, জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছিল।
তবে ম্যানেজ প্রক্রিকার মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা পরে রয়েছে। এ ঘটনার বছর খানেক বাদেই পরিক্ষায় অসৎ উপায় অবলম্বন করার কারনে তৎকালীন মাদ্রাসার হল সচিব সহ কয়েক জনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে তদন্ত কমিটির প্রতিনিধি দল ঘটনার সত্যতা পেয়ে দাখিল এবং আলিম পরিক্ষার কেন্দ্র বাতিল করে দেয়। যা বর্তমানেও বিদ্যমান।
এ সকল শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে বর্তমান প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব রত সহ তার অন্যান্য সাঙ পাঙ্গ দের তেমন মাথা ব্যাথা না থাকলেও, আর্থিক বিষয়,ভূয়া কমিটি গঠন মামলা পরিচালনা করা, শিক্ষকদের মাঝে বিবাদ সৃস্টি করে রাখা গোপনে জামায়াত সংগঠনের কর্মকান্ড নিয়েই তারা বেধিব্যস্ত থাকার বিষয়টিও নাম না প্রকাশের শর্তে সংশ্লিষ্ট কর্মচারী সহ একাধীক শিক্ষার্থীরা নিশ্চিত করেছে। এ বিষয়ে,বরিশাল সাগরদী ইসলামীয়া কামিল মাদ্রাসা’র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃআব্দুল হালিম আল মাদানী অকপটে তার সকল ভুল শিকার করে সকল দূর্ণীতি অনিয়মের দায়ভার অনুমোদন হীন গভর্নিং বডির কমিটির উপর চাপায়। প্রস্তাবিত কমিটি’র সভাপতি সম্পাদক সহ অন্নান্য ক্ষমতাধরদের চাপে সকল অনিয়ম দূর্ণীতির পক্ষ নিতে বাধ্য করা হয়েছে বিধায় তিনি তাদের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করেছেন।
বরিশাল নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ডের সাগরদী এলাকায় বরিশাল সাগরদী ইসলামীয়া কামিল মাদরাসা’র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃআঃহালিম মাদানী’র ছেলে আতিক কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন রত অবস্থায় শিবিরের বড় নেতা হিসেবে ক্ষ্যাতী ছিল৷ পুত্রের শিবিরের বড় নেতা’র বিষয়টিও তিনি শিকার করে বলেন ২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বের হবার পরে তার ছেলে আর সংগঠন করে না বলেন তিনি।গভর্নিং বডি’র প্রস্তাবিত কমিটি’র সভাপতি সরকারি বিএম কলেজের সহযোগী অধ্যাপক কাউয়ুম হোসেন এ ব্যাপাটে বলেন, কোন ধরনের অনিয়ম দূর্ণীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না চুড়ান্ত ভাবে কমিটি অনুমোদন হলে তিনি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
কমিটি’র অপর এক সদস্য ২৪ নং ওয়ার্ড আ’লীগ সাধারন সম্পাদক নাজমুল হুদা জানায়, এর আগের অধ্যক্ষ নানান অনিয়ম দূর্ণীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল তবে বর্তমানের বিষটি জানা নেই তার। তবে অচিরেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।বরিশাল জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আনোয়ার হোসেন জানায় তারা এধরনের কোন অভিযোগ পায়নি৷ লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পাঠক’ এ সংক্রান্ত তথ্য বহুল বিস্তারিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন পরবর্তী পর্বে পাঠকদের কাছে তুলে ধরা হবে।
Leave a Reply