মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৭ অপরাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ শিকারে নেমেছেন উপকূলীয় এলাকা বরগুনার পাথরঘাটার জেলেরা। বুধবার রাত ১২টার পর থেকে জাল ও ফিশিং বোট নিয়ে সাগরের দিকে ছুটছেন তারা।
গভীর সাগরে ইলিশ পাওয়ার আশায় ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে দল বেঁধে বেরিয়ে পড়ছেন জেলেরা। তাদের প্রত্যাশা নিষেধাজ্ঞার ফলে আগের চেয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে সাগরে।
সাগরের বুক জুড়ে থাকবে শুধু জেলে আর ট্রলার। আবারো সরগরম হয়ে উঠবে জেলে পল্লি। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসবেন তাজা ইলিশ কিনতে। আবারো ইলিশ ক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠবে দেশের বৃহত্তম মৎস অবতরণ কেন্দ্র বরগুনার পাথরঘাটা।
মৎস অবতরণ এলাকার ঘাট আবার সরব হয়ে উঠেছে। যেখানে নিষেধাজ্ঞার সময় শূন্যতা বিরাজ করছিল সেখানে এখন আবার প্রাণ সঞ্চার ফিরে এসেছে। তবে এই উৎসবের মধ্যে রয়েছে করোনা আতঙ্ক।
মৎস্য বিভাগ জানায়, ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্ষতিপূরণ হিসেবে জেলেদের ৮৬ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৫৬ কেজি করে দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ৩০ কেজি করে পাবে।
৬৫ দিন পরিবার পরিজন নিয়ে চলতে কষ্ট হলেও আবারো নিজ পেশায় ফিরতে পেরে খুশি জেলেরা। এদিকে আড়তদাররাও তাদের আড়ত নতুন করে সাজিয়ে নিচ্ছেন। নতুন করে আবার ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার পাইকারদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন ইলিশ বিক্রির জন্য।
পাথরঘাটা সদর ইউপির পদ্মা এলাকার জেলে নুরুল ইসলাম জানান, দুই মাস পর সাগরে মাছ শিকারে যাচ্ছেন। মাছ ধরা একমাত্র পেশা হওয়ায় এতদিন অলস সময় পার করতে হয়েছে তাদের। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় ধারদেনা করে সংসার চালিয়েছেন তারা। এখন সমুদ্রে ইলিশ ধরা পড়লে সামনের দিনগুলো তাদের ভালো কাটবে বলে আশা তাদের।
কালমেঘা ইউপির ছুনবুনিয়া গ্রামের জেলে কালাম মিয়া বলেন, গত ৬৫ দিন সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাড়িতে বেকার ছিলাম।
ধার-দেনা করে সংসার চালিয়েছি। এখন সাগরে মাছ শিকার করে ধারদেনা পরিশোধ করবো। আশা করছি প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।
পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্তু কুমার অপু জানান, সাগরে মাছসহ মূল্যবান প্রাণিজ সম্পদের ভান্ডার সুরক্ষায় চলতি বছরের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার।
আজ থেকে ইলিশসহ অন্যান্য সব ধরনের মাছ শিকারে আর কোনো বাধা নেই। জেলেদের নিরাপত্তার জন্য ফাই জ্যাকেট ও বয়া নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের বিশেষ ভিজিএফের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাথরঘাটায় নিবন্ধিত ১১ হাজার ৪৩৮ জেলে এ সহায়তা পেয়েছে।
Leave a Reply