মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের পায়রা নদীর প্রতিনিয়ত ভাঙনের ফলে পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া জমিজমা, বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সহায়-সম্বল আর মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয়টুকু হারিয়ে অসহায় মানুষগুলো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিচ্ছেন। নামমাত্র বেড়িবাঁধ দেওয়ায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে এলাকার ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। নদীভাঙনে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে ভুগছে ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া ও জয়ালভাংগা এলাকার পায়রা নদীর প্রবলস্রোতে ভয়াবহ ভাঙনে এ এলাকার প্রায় শতাধিক বাড়িঘর, জমিজমা, মসজিদ, পূর্বপুরুষদের কবরস্থান, গাছাপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আতঙ্কে রয়েছে আশপাশের আরো বেশ কয়েকটি গ্রামের লোকজন। ভয়াবহ নদীভাঙনে নিঃস্ব-সর্বস্বান্ত অসহায় মানুষদের বুকফাটা কান্না দেখার যেন কেউ নেই, ব্যাহত হচ্ছে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এ এলাকার ৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের কিছু অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি ও অবহেলার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর।
স্থানীয় সমাজসেবক ও সাবেক ইউপি সদস্য সেলিম মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাবে স্থায়ী বেড়িবাঁধ না হওয়ায় বারবার নদী ভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে পড়ছি আমরা। স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মিত হলে আমাদের বাপ-দাদার জমিজমা রক্ষা পেত। এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক বাড়িঘর, মসজিদ, ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এ বিষয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার আলম মুঠোফোনে জানান, কিছুদিন পূর্বের জলোচ্ছ্বাসে তেতুলবাড়িয়ায় ৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেগুলো দ্রুত মেরামত করা হবে। স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পটি আমাদের প্রক্রিয়াধীন।
বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকা থেকে মাটিকাটায় বাঁধ কতটুকু টেকসই হচ্ছে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, দূর থেকে মাটি কেটে আনার বরাদ্দ না থাকায় বেড়িবাঁধের পাশ থেকেই মাটি কাটতে হচ্ছে এ কারনে বাঁধগুলো টেকশই হচ্ছে না। সুপার সাইক্লোন সিডরের পর কতোবার এ বাঁধগুলো মেরামত করা হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি কাগজপত্র না দেখে সঠিক উত্তর দিতে পারবেন না বলে জানান।
Leave a Reply