শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৯ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত মৃত্যু বেড়ে হয়েছে ২৬। এখনো চিকিৎসাধীন ১১ জন।
দগ্ধ অবস্থায় যে ৩৭ জনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছিল, তাদের মধ্যে আরো চারজন গতকাল মারা গেছেন। গত শনিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে গতকাল দুপুরের মধ্যে মারা যান জুলহাস উদ্দিন (৩০), শামীম হাসান (৪৫) ও মো. আলী মাস্টার (৫৫)। গত রাতে মারা যান বরিশালের বাকেরগঞ্জের আবুল বাশার মোল্লা (৫১) এবং একই উপজেলার বারঘড়িয়া গ্রামের সোবাহান ফরাজীর ছেলে মনির ফরাজী (৩০)। তাঁদের নিয়ে গত রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬ হয়েছে।
জুলহাস উদ্দিনের আগে এই আগুনে দগ্ধ হয়ে তাঁর সাত বছর বয়সী ছেলে জুয়েলের মৃত্যু হয়। ছেলের লাশ নিয়ে গতকাল পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী এলাকার বাড়িতে পৌঁছতেই জুলহাসের মৃত্যুর খবর পান স্ত্রী রহিমা বেগম। মো. আলী মাস্টারের ছেলের বউ জান্নাতুল ফেরদৌসি বলেন, তাঁর শ্বশুর আজ (রবিবার) সকালে মারা গেছেন।
তিনি জানান, বায়তুস সালাত জামে মসজিদের কাছেই তাঁদের বাড়ি। তাঁর শ্বশুর ওই মসজিদেই নিয়মিত নামাজ পড়তেন। আগুনে তাঁর পোশাক পুড়ে শরীরও দগ্ধ হয়। ওই অবস্থায় তিনি বাসায় ফিরে মেয়ের কাছে লুঙ্গি চান। এমন পরিস্থিতি দেখে ছেলে রাসেল বাবাকে সরাসরি শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসেন।
গতকাল দগ্ধদের অবস্থার খোঁজখবর নেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সে সময় আইসিইউতে থাকা ছয়জনসহ ১৩ জনের সবাইকে সারিয়ে তোলাই তাঁদের সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে বলে জানান মন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানও। তিনি জানান, নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার ও দগ্ধদের প্রত্যেকের পরিবারকে আপাতত ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। কারো চিকিৎসার জন্য যদি কোনো ওষুধ বা টাকা-পয়সার প্রয়োজন থাকে, তাহলে তাঁরা ডা. সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সহায়তা নিতে পারবেন।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা আন্ত মন্ত্রণালয় সভা ডাকব। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে হতাহতদের পরিবারকে কী পরিমাণ সহায়তা দেওয়া হবে। এ জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নেব।
এ ছাড়া গতকাল দগ্ধদের দেখতে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে যান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। নারায়ণগঞ্জের মতো বড় শহরে ভালো চিকিৎসাসুবিধা না থাকায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার মেগা প্রজেক্ট করছে। কিন্তু একটা কিছু হলেই এখনো ঢাকায় আসতে হচ্ছে। প্রতিটি জেলায় বার্ন ইউনিট থাকতে হবে। এটা আইসিইউর চেয়েও বেশি দরকার। সব চিকিৎসককে পোড়া রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
Leave a Reply