শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন
নেছারাবাদ প্রতিনিধি: আমীরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা শরীফের পীর ছাহেব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (মা.জি.আ.) বলেন – বর্তমানে বদ আকীদায় দেশ ছেয়ে গেছে। আলেমগণ কোনটি সঠিক ও কোন্টি বদ আকীদা তার পার্থাক্য করতে পারছেন না। বতিল ফেরকাদের আকীদাকেই অনেকে সঠিক আকীদা হিসেবে গন্য করে আমল করতে থাকেন।
অনেকেই আকীদার বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকেন। এ সকল ফেরকার অধিকাংশেরই টার্গেট পীর মুরীদী। এটা নাকি শিরক। অথচ তার ভুলে গিয়েছে এদেশ আবাদ হয়েছে আউলিয়ায়ে কেরামের মাধ্যমে। আমাদের পূর্বপূরুষগণ মুসলমান হয়েছিলেন পীর আউলিয়াদের হাতে। এদেশের মুসলমানরা যখন দীর্ঘ দুইশত বছরের ইংরেজ শাসন ও হিন্দু জমিদারদের নিষ্পেশনের ফলে তাদের জাতীয় পরিচয় পর্যন্ত বিস্মৃত হয়ে গিয়েছিল।
তাদের নামের পূর্বে শ্রী লিখিত হতো, পরণে থাকত ধুতি, মাথায় রাখত টিকি, নামাজ পড়ত না, রোযা রাখত না, হিন্দুদের পূজা-পার্বনে যোগদান করত। ছারছীনা শরীফের মরহুম দাদা হুজুর কেবলা আল্লামা শাহ্সূফী হযরত মাওলানা নেছার উদ্দীন আহমদ (রহঃ) এসব কুসংস্কারের রিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। মুসলামনদিগকে কলেমা, নামাজ, রোযা শিক্ষা দেন। নামের পূর্বে শ্রী লেখার পরিবর্তে মুহাম্মদ লেখার প্রচলন করেন।
ধুতির পরিবর্তে লুঙ্গি পরতে শেখান। মাথার টিকি কেটে টুপি ও পাগড়ি পরায়ে সাচ্চা মুসলমান হিসেবে গড়ে তোলেন। শুধু এতেই তিনি খ্যান্ত থাকেন নি। দেশের এহেন পরিস্থিতিতে দেশের গোশায় গোশায় মাদরাসা, মসজিদ, খানকা, মাহফিল, জিকিরের মজলিস কায়েম করে দেশে ইসলামি আবহ সৃষ্টিতে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন।
আফসোস লাগে যখন এসকল হক্কানী আউলিয়ায়ে কেরামের সৃষ্ট ঘটনাগুলি থেকে তাদের উত্তরসূরী তথাকথিত ইসলামি আন্দোলনের কর্মী নামধারী ব্যক্তিদের থেকে এ ধরণের কথা কানে আসে। এ প্রসঙ্গে হযরত পীর ছাহেব কেবলা সর্বত্র জমইয়াতে হিযবুল্লাহর কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে তা’লীমী জলসা কায়েমের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। মাহফিল কায়েমে ক্ষেত্রে ফেসবুকে ভাইরাল দেখে নয় বরং সঠিক আকীদা ও আমলের অনুসারী আলেমদের দ্বারা মাহফিল করার পরামর্শ দেন।
আজ ছারাছীনা দরবার শরীফের ১৩৩তম বার্ষিক ঈছালে ছাওয়াব মাহফিল মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বাদ মাগরিব তা’লীমের পর আলোচনায় একথা বলেন।
বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমীর ও হযরত পীর ছাহেব কেবলার বড় ছাহেবজাদা আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছর উদ্দিন আহমদ হুসাইন বাদ মাগরীব আলোচনা করেন। তিনি তার আলোচনায় বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহ, দীনিয়া মাদরাসা, তা’লীমী জলসা ও এলাকায় অত্র ছেলছেলার প্রচার ও প্রসার কল্পে ওয়াজ মাহফিল কায়েমের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আরো বলেন, ছারছীনা দরবার শরীফ দলীয় রাজনীতি করেনা। সুতরাং কোন্ নির্দৃষ্ট দলের সাথে অত্র দরবারের কোন সখ্যতা বা বৈরীতা নেই। আমরা সরকারের ভাল কাজ যেমন সমর্থন করি তেমনি ভাল কাজে সহযোগিতা করি। আমরা মুসলিম জনসাধারণকে পরহেযগার মুসলমানে রূপান্তরিত করতে চাই। বড় হুজুর সকলকে আগামীকাল বাদ জুময়াহ্ আখেরী মুনাজাতে শরীক থাকার আহবান জানান।
দ্বিতীয় দিন আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন যথাক্রমে – মাওলানা মোঃ রূহুল আমিন ছালেহী, মাওলানা আ.জ.ম. ওবায়দুল্লাহ্, মাওলানা আবদুল গফফার কাসেমী, ড. মাওলানা সৈয়দ মুহাঃ শরাফত আলী, মাওলানা কাজী মফিজ উদ্দিন, মাওলানা মোঃ রূহুল আমীন আফসারী, মাওলানা হাফেজ মোঃ বোরহান উদ্দীন ছালেহী প্রমূখ।
Leave a Reply