রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২২ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক ॥ বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহনেওয়াজ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেন বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন। তবে এদিন রাতে আবার তিনি বলেন, ‘স্বীকারোক্তি তো পুলিশের কাছে হয় না, স্বীকারোক্তি হয় জজের কাছে।’
বৃহস্পতিবার রাতে এক প্রশ্নের জবাবে এসপি মারুফ হোসেন বলেন, ‘মিন্নি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমাদের যে তথ্য দিয়েছেন, তাতে আমাদের মনে হয়েছে, তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত; যার কারণে এইসব তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে তাকে রিমান্ডে এনেছি। এই হত্যাকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, এটাই প্রতীয়মান হয়েছে।’
এর আগে এদিন দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে পুলিশ সুপার দাবি করেন, ‘মিন্নি আমাদের কাছে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আমাদের কাছেও প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে, মিন্নি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। মিন্নি স্বীকার করেছেন বলেই আমরা বিষয়গুলো আদালতের কাছে তুলে ধরে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিমান্ড আবেদন করেছি এবং আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।’
তিনি আরও দাবি করেন, ‘যারা হত্যাকারী ছিল তাদের সঙ্গে মিন্নি শুরু থেকেই যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় অংশ নেন। এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার আগে এর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যা যা করা দরকার, তার সবকিছুই তিনি করেছেন। হত্যাকারীদের সঙ্গে হত্যা পরিকল্পনার মিটিংও করেছেন।’
আদালতে ১০ আসামির দেওয়া স্বীকারোক্তিতে মিন্নির জড়িত থাকার কথা উঠে এসেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওই সময় এসপি বলেন, ‘আদালতে দেওয়া জবানবন্দির বিষয়ে আমি কোনও কথা বলতে চাই না। তবে একটা বিষয় বলতে চাই, একাধিক আসামি আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মিন্নির জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।’
১৬ জুলাই সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবার বাড়ি থেকে পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয় মিন্নিকে। পরে এদিন রাত ৯টার দিকে বরগুনার গোয়েন্দা পুলিশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রিফাত শরীফকে হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।
পরদিন ১৭ জুলাই বেলা ৩টায় বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নিকে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী শুনানি শেষে মিন্নির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত মিন্নিসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এখন পর্যন্ত ১০ আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।সুত্র,বাংলা ট্রিবিউন
Leave a Reply