শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৭ পূর্বাহ্ন
কলাপাড়া প্রতিনিধিঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন দেশের মানুষ যাতে না খেয়ে কষ্ট না পায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। দেশে গনতন্ত্র আছে বলেই দূর্যোগের সময় সরকার মানুষের পাশে দাড়িয়েছে। ঝড়-বন্যা, জলোচ্ছাস প্রাকৃতিক নিয়মে আসে। জিনিস গেলে পাওয়া যায়, জীবন গেলে পাওয়া যায়না। ঘূর্ণিঝড়ে যাদের ঘরবাড়ী ভেঙ্গেছে তাদের ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে। এবারের জলোচ্ছাস অনেক বড় জলোচ্ছাস হয়েছে। আমরা চাই দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ এই দূর্যোগ থেকে মুক্তি পাক। ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া বাধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল পরবর্তী দূর্যোগ কবলিত এলাকা পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে কলাপাড়া সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, দক্ষিনের জনপদে অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি, শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। ফসল উৎপাদন হবে। সেসব ফসল প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে উঠবে। দেশের মানুষ খেয়েপড়ে সুখে শান্তিতে থাকবে। কর্মসংস্থান হবে, সেই ব্যবস্থা করেছি। বেকারের সংখ্যা এখন মাত্র তিন ভাগ আছে। ইনশাল্লাহ সেটুকোও থাকবেনা। সে ব্যবস্থাও আমি করে দিব। এসময় প্রধানমন্ত্রী তরুনদের উদ্দেশ্যে বলেন, নিজেদের উদ্যোক্তা হতে হবে, নিজে উদ্যোগ নিতে হবে। তরুন সমাজকে সেই আহ্ববান জানাবো। চাকরির জন্য ঘুরে বেড়ানো নয়, নিজেই চাকরি দেবেন; সেই যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আমরা ইনফরমেশন সেন্টার, কম্পিউটার ট্রেনিং, কম্পিউটার ল্যাব স্কুল সব করে দিয়েছি। এতে করে আমাদের আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন জনগোষ্ঠী গড়ে ওঠবে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতার আদর্শকে বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো ইনশাল্লাহ।
প্রধানমন্ত্রী আবেগ আপ্লুত কন্ঠে বলেন, মা-বাবা, ভাই-বোনদের হারিয়ে আমি এখন এতিম। আমার আর কেউ নেই। আপনারাই আমার সব। আপনাদের সুখ দুঃখে পাশে থেকে আমি কাজ করে যেতে চাই।
কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি বাবু ণির্মল নন্দীর সভাপতিত্বে আয়োজিত জনসভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান প্রতিমন্ত্রী মোঃ মহিববুর রহমান মহিব, এমপি, পানি সম্পদ মন্ত্রনালায়ের প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক এমপি, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজ এমপি, বরগুনা -২ আসনের সাংসদ সাম্মি আক্তার, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল হাফিজ মল্লিক এমপি, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মোঃ আফজাল হোসেন, পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর, সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিপি আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান প্রমুখ। এছাড়াও জেলা উপজেলা আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন অংগসংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুপুর বারোটা ২০ মিনিটের দিকে হেলিকাপ্টার যোগে খেপুপাড়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অবতরন করেন। সাড়ে বারোটায় জনসভাস্থলে পৌছে দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ২ হাজার মানুষের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরন করেন। জনসভা শেষে শেখ কামাল শেতু পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কনফারেন্স রুমে বরিশাল বিভাগীয় উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদীর সাথে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। বিকেল ৩ টায় তিনি পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হেলিপ্যাড থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে একনজর দেখতে কলাপাড়া উপজেলাসহ পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার হাজার হাজার মানুষ সমাবেশস্থলে এসে যোগ দেন। এতে সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিনত হয়। প্রচন্ড তাপদাহের মাঝেও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য হাজার হাজার মানুষ সকাল থেকে অপেক্ষায় থাকেন।
Leave a Reply